গাইবান্ধার পলাশবাড়ী রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মো. রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (টিআইডিপি-৪)-এর আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইউআরসি/টিআরসিতে তিনদিনব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। উক্ত প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষকদের (শিক্ষক) জন্য বরাদ্দকৃত বাজেট থেকে মোটাঅংকের টাকা বাঁচিয়ে নিম্নমানের প্রশিক্ষণ উপকরণ সরবরাহ ছাড়াও প্রশিক্ষণার্থীদের যাতাযাত ভাতা কম দেয়াসহ নানা অভিযোগ উঠেছে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মো. রবিউল ইসলাম-এর বিরুদ্ধে।
অনেকেই বলছেন এসব কাজে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন একই অফিসে প্রায় ১ যুগ থেকে কর্মরত সহকারি ইন্সট্রাক্টর মো. সোহেল মিয়া। আরডিপিপি-এ বাজেটে দেখা যায়, প্রতিটি প্রশিক্ষণে দু’জন করে ট্রেইনার রয়েছে। প্রতি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য তথ্যপত্র, ১টি কলম, ১টি প্যাড, নেম কার্ডের জন্য বরাদ্দ ৫’শ টাকা ও প্রতি প্রশিক্ষণার্থী একটি করে ব্যাগ বাবদ ৫’শ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এ উপজেলায় মোট ৩২টি প্রশিক্ষণ ব্যাচের বিপরীতে প্রতি ব্যাচে ৩০ করে ৯৬০ শিক্ষক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রেস থেকে ছাপানো একটি তথ্যপত্র যার মূল সর্বোচ্চ ১’শ থেকে ১’শ ২০ টাকা, ১৫ থেকে ২০ টাকা মূল্যের একটি কলম, ১০ টাকা মূল্যেরনএকটি নেম কার্ড, ২০ থেকে ৩০ টাকা মূল্যের একটি প্যাড এবং প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য একটি করে ব্যাগ যার বাজার মূল্য আনুমানিক (সর্বোচ্চ) ৩’শ টাকা। যা সর্বমোট গিয়ে দাঁড়ায় ৪’শ ৫০ থেকে ৪’শ ৬০ টাকা। কিন্তু এসবের জন্য বাবদ বরাদ্দ রয়েছে ১ হাজার টাকা। দেখা যাচ্ছে সবকিছু মিলে প্রশিক্ষণার্থীর বাজেট থেকে গায়েব করা হচ্ছে ৫’শ ৪০ থেকে ৫’শ ৫০ টাকা।
প্রশিক্ষণার্থী বাজেট থেকে গায়েব হচ্ছে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা। বাজেট অনুযায়ী প্রতি প্রশিক্ষণার্থী প্রতিদিন খাবার বাবদ ২’শ ৮০ টাকা। কিন্তু অনুসন্ধান কালে জানা যায়, প্রশিক্ষণ শুরু’র দিনই শুধুমাত্র খাবার দেয়া হয়। পরবর্তী দু’দিন দেয়া না শুধু নাস্তা দেয়া হয় যার মূল্য ২৫ থেকে ৩০ টাকা। ইন্সট্রাক্টর রবিউল ইসলাম বলছেন বাকী দু’দিন খাবারের পরিবর্তে নগদ অর্থ দেয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা বলেন, পরিপত্রে দেখা যায় ৩০ জনের ব্যাচে যাতাযাত বাবদ বরাদ্দ ৭৫ হাজার টাকা, দু’জন ট্রেইনার এবং ৩০ জন প্রশিক্ষণার্থী যাদের প্রত্যেকে ২ হাজার ৩’শ ৪৩ টাকা পাওয়ার কথা থাকলে সেখানে প্রশিক্ষণার্থীদের দেয়া হচ্ছে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২’শ ৫০ টাকা করে তিন দিনে মোট ৭’শ ৫০ টাকা।
তারা আরও জানান, সকাল ৯টায় প্রশিক্ষণ শুরু হয় উপজেলা শহর থেকে যাদের ২০ থেকে ২২ কিলোমিটার দুর থেকে আসতে হয়। তাদের সকাল ৭টার সময় বের হতে হয়। এতো সকালে যানবাহন কম থাকায় রিজার্ভ যানবাহন নিয়ে আসতে হয়। এতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়। অথচ যাতাযাত ভাতা তিন দিনে সর্বোচ্চ ৭’শ ৫০ টাকা। এসব মিলে কয়েক লক্ষ টাকা গায়েবের অভিযোগ উঠেছে ইন্সট্রাক্টর রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা জানান, প্রশিক্ষণ শেষে আমাদেরকে যা দেয় তাই নিতে হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আরজুমান আরা গোলেনুর জানান, ওসব শিক্ষা অফিসের দেখার বিষয় নয়। তাদেরকে আমরা শুধু তালিকা দিয়ে থাকি। বরাদ্দের বিষয়টা তারাই দেখেন।
উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের সহকারি ইন্সট্রাক্টর সোহেল মিয়া জানান, কোন অনিয়ম হয়নি। কে কি বললো সেটা তার বিষয়।
উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর রবিউল ইসলাম জানান, বরাদ্দ অনুযায়ী সবকিছু দেয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা কেউ কেউ বাড়ী থেকে খাবার নিয়ে আসেন। তাই তাদের খারাবের পরিবর্তে নগদ অর্থ দেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল হাসান জানান, যেদিন প্রশিক্ষণের উদ্বোধন হয়েছিল সেদিন আমি গিয়েছিলাম। বরাদ্দের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন