গাইবান্ধার সাঘাটায় ভিজিডি’র পঁচা চাল বিতরণের অভিযোগ
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভিজিডির উপকার ভোগীদের মাঝে পচাঁ, পোকাধরা ও নিম্নমানের চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। খাওয়ার অনুপোযুগী এ চাল উপকারভোগীরা নিজেরা না খেয়ে গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন। তবে খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ বলছেন, চালের গুণগত মান ঠিকই আছে।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের আলেয়া বেগম ও লাকী বেগম। অভাবের সংসারে সরকারিভাবে ভিজিডির ৩০ কেজি চাল তাদের জন্য সরকারের দেয়া অশির্বাদ। এ চাল দিয়েই তাদের সংসার চলে। কিন্তু এবার বোনারপাড়া খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দেয়া চাল দেখতে ইউপি চত্ত্বরে এসেছেন আলেয়া বেগম, লাকী বেগমসহ আরও অনেকে। চাল দেখে সবাই হতবাক। কারণ ধান আর চালের রংয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কোনো চালের রং লালচে, কোনোটি সবুজ আবার কোনটি কালো।
মুক্তিনগর ইউনিয়নের আলেয়া বেগম বলেন, ‘সরকার করোনা মোকাবিলায় লকডাউন দিয়েছে। কিন্তু জনগণকে যে চাল দিচ্ছে তা খেলে করোনা ভাইরাস লাগবে না, অসুস্থ হয়ে কখন যে মরবো তার ঠিক নেই। এ চাল তো মানুষ খেতে পারবে না। গরু ছাগলকে এ চাল খাওয়ালেও অসুস্থ হবে। কারণ চালের মধ্যে পোকা নড়াচড়া করছে।’
একই ইউপির আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি চাল এতটা নিম্নমানের হবে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। সরকার মনে করে জনগণ ঠিক ঠাক চাল পাচ্ছেন । কিন্ত এ চাল এতোটাই নিম্নমানের যে মানুষ খেতে পারবে না। সেটা হয়তো সরকার জানে না।’
ইউনিয়নের নবান আলী বলেন, ‘এ চাল সম্পূর্ন পচা। গবীর বলে আমাদের জন্য পঁচা চাল! কী আর করার, কে দেখবে আমাদের কষ্ট।’
সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউপির সদস্য পান্না শেখ বলেন, ‘নিম্মমানের চাল বিতরণের ফলে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরা জনগণের কাছে মুখ দেখাতে পারছে না। জনগণ মনে করে এ চাল আমরাই দেই। এ চাল বিতরণের ফলে সরকার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে।’
সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশাদ আজিজ রোকন বলেন, ‘এবার ভিজিডির চালের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতো নিম্নমানের চাল কখনো দেখিনি। এ চাল বিতরণের কারণে উপকারভোগীরা আমাদের গালমন্দ করছেন। বিষয়টি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বিতরণের কথা বলেন। ফলে বাধ্য হয়ে চাল বিতরণ করি।’
এ বিষয়ে সাঘাটা উপজেলা বোনারপাড়া খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলম বলেন,‘চালের রং লালচে হওয়ার কারণ বেশি হিট পেয়েছে। তবে চালগুলোর গুণগতমান কমেনি। সম্পূর্নভাবে খাওয়ার উপযোগী। মাঝে মাঝে আমি নিজেও খাই।’
সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সাঘাটা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে মোট ভিজিডি’র উপকারভোগীর সংখ্যা ২০৮০ জন । এর মধ্যে মুক্তিনগর ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিটির উপকারভোগী মোট ২০৩ জন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন