গাইবান্ধা হাসপাতালে রাত ১২টা বাজলেই ঘুমিয়ে পড়েন জরুরী বিভাগের চিকিৎসক
সম্প্রতি গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও ডাক্তারদের অবহেলার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দিনে কোনমতে চিকিৎসা সেবা দিলেও রাত ১২টা বাজলেই ঘুমিয়ে পড়েন জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। তাদের পরিবর্তে চিকিৎসা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। এমন কি ব্যবস্থাপত্রও দেন তারা। ম্যাটস পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কীভাবে সব রোগের ব্যবস্থাপত্র দেন তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
শনিবার (৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার সময় গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎক ডা. রাজীব হোসেন পাশের একটি রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। তার পরিবর্তে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন দুজন ইর্ন্টান। নবজাতক থেকে সব বয়সী রোগীদের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দেন তারা।
এ সময় সদর উপজেলার তুলসীঘাট থেকে চিকিৎসা নিতে আসা তানজিন নামে এক যুবক জানান, আমার মায়ের প্রচণ্ড পেট ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। জরুরি বিভাগে থেকে চিকিৎসা দেওয়ার পর তারা হাসপাতালে ভর্তি হতে বললেন। দায়িত্বরত চিকিৎসক কই? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, স্যার রুমে আছেন, আমরাই সব পারি।
শুধু তানজিন নয়, ওই দুই ছাত্রকে দুই নবজাতকসহ অন্তত ৫ জন রোগীর চিকিৎসাসহ ব্যবস্থাপত্র দিতে দেখা যায়। তখনও দায়িত্বরত ডা. রাজীব হোসেন পাশের রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ১২টা ৪০ মিনিটে জরুরি বিভাগে আসেন তিনি। ৭ মিনিট একজন রোগীকে চিকিৎসা দিয়েই আবার ১২টা ৪৭ মিনিটে পাশের রেস্ট রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।
জানা যায়, জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ইর্ন্টান ছাত্র আমিনুল ইসলাম রংপুর সিটি ম্যাটসের ছাত্র। আরেকজনের নাম সিপন রায়। তিনি বগুড়া টিএমএসএস ম্যাটসের ছাত্র। সব বয়সের রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি ব্যবস্থাপত্র আপনারা কেন দিচ্ছেন- এই প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আমরা বলতে পারব না আমাদের স্যার জানেন। ‘স্যার কই’ জিজ্ঞেস করতেই বলেন, রুমে আছেন।
এ বিষয়ে দায়িত্বরত ডা. রাজিব হোসেনে বলেন, দেখেন রাতে পুরো হাসপাতালের দায়িত্ব আমার উপর। এত কাজ তাই একটু রেস্ট নিচ্ছি। তাছাড়া ইর্ন্টানরা ভালো চিকিৎসা দিতে পারেন। এ ব্যপারে সদর হাসপাতালের তত্ববধায়ক ডা. মাহাবুব হোসেন বলেন, জরুরি বিভাগে দায়িত্ব বাদ দিয়ে ডাক্তার ঘুমিয়ে থাকবে এটা কাম্য নয়। তবে রোগী না থাকলে তারা রেস্ট নিতে পারবে। এ রকম কোন ঘটনা ঘটলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়শন (বিএমএ) গাইবান্ধা জেলা শাখার সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ডা. মো. মঞ্জুরুল হাসান বলেন, কোনো ডাক্তারের দায়িত্ব অবহেলা করে ঘুমিয়ে থাকা অবশ্যই উচিত না। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা দরকার বলে আমি মনে করি। আর ইর্ন্টান ছাত্ররা সব রোগের ব্যবস্থাপত্র দিতে পারবে না। তবে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ তারা লিখতে পারবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন