গুরুজনের জন্য লাল গালিচা ছেড়ে দিলেন শেখ হাসিনা
গুরুজনকে কীভাবে সম্মান করতে হয়, তার নতুন নজির স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বাংলা একাডেমির রাস্তায় রাখা লাল গালিচা ছেড়ে দিলেন বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী নারী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ঘুরে ঘুরে স্টল দেখছিলেন সম্প্রতি ‘মানবতার জননী’ নামে অভিহিত হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাথে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এই বাংলা বিভাগেরই ছাত্রী, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। মেলার উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী হাঁটবেন, তাই রীতি অনুযায়ী লাল গালিচা বিছানো হয়েছিল মেলার নির্দিষ্ট রাস্তা জুড়ে। এই নির্দিষ্ট রাস্তা দিয়ে হেঁটে প্রধানমন্ত্রী প্রতিবছর বইমেলা ঘুরে দেখেন এ রীতিই চলে আসছে।
কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে শেখ হাসিনা সর দাঁড়ালেন তাঁর জন্য বিছানো লাল গালিচা থেকে। নির্বিঘ্নে হাঁটতে দিলেন শিক্ষক অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে। লাল গালিচা ছেড়ে দিয়ে পাশে সাধারণ রাস্তায় নেমে গেলেন শেখ হাসিনা।
ছবিতে দেখা গেছে, দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক আনিসুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত লাল গালিচায় সাদা পায়জামা আর পাঞ্জাবি পরে হাঁটছেন। আর গালিচার বাইরে পাকা রাস্তায় হাঁটছেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী লাল গালিচার বাইরে, তাঁর এডিসি আর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসএসএফ সদস্যরাও বাইরে তাঁর সাথে, আশপাশে।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ছবি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। তবে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সমালোচনা করেছেন। ছবিতে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী লাল গালিচা ছেড়ে দিলেও আসাদুজ্জামান নূর, আনিসুজ্জামানের সামনে সামনে গালিচার ওপর দিয়ে হাঁটছেন।
আসাদুজ্জামান নূর গালিচা ছেড়ে না দেয়ায় অনেকে মন্তব্য করেছেন, গুরুজনকে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা প্রদর্শনের বিষয়টি বোধহয় সংস্কৃতিমন্ত্রী চট করে ধরতে পারেননি। এ নিয়ে আওয়ামীপন্থী কলামিস্ট ডাক্তার হাসান মাহমুদ নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরসহ অন্যান্যরা কি জানতেন, কেন জননেত্রী শেখ হাসিনা লাল গালিচা ছেড়ে হাঁটছেন? জানার কথাও নয়, হয়তো পরে আফসোস করেছেন বা করবেন! জননেত্রী শেখ হাসিনা যা পারেন, তা সবাই পারে না, আবার চিন্তাও করতে পারে না। যে শিক্ষাটি শেখ হাসিনা দিলেন তা কয়জনের চিন্তা আর চেতনায় আসে?’
মাঝে মাঝেই ইতিবাচক নানা উদাহরণ সৃষ্টি করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজ গ্রাম টুঙ্গিপাড়া গিয়ে রিকশা ভ্যানে চড়ে পাড়া ঘুরে কদিন আগে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া অতি সম্প্রতি রান্নাঘরে নিজ হাতে তাঁর রান্না করার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে মূলধারার মিডিয়াতেও জনপ্রিয় সংবাদ হিসেবে প্রচার পায়।
সম্প্রতি প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারে সেনাবাহিনী অসহায় রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালালে তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে পুরো বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার উদারতায় পশ্চিমা মিডিয়া এতই মুগ্ধ হয় যে তাঁকে ‘মানবতার জননী’ নামে অভিহিত করে সংবাদ প্রচার করে। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, নিজ দল আওয়ামী লীগ এবং সরকার থেকেও শেখ হাসিনার একক জনপ্রিয়তা অনেক বেশি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন