গোদাগাড়ীর ‘জঙ্গি আস্তানা’য় বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বেণীপুর গ্রামের ‘জঙ্গি আস্তানা’য় আজ সকাল থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ শুরু করেছে। তবে এখন পর্যন্ত সেখান থেকে কোনো অস্ত্র বা বোমা উদ্ধার করা হয়নি।

আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ‘অপারেশন সান ডেভিল’ শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার আগে মাইকিং করে সেখান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি ১৪৪ ধারা এখনো বহাল আছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেণীপুর গ্রামের ‘জঙ্গি’ সাজ্জাদ আলীর বাড়িটিতে তিনটি কক্ষ রয়েছে। তবে সেখানে কোনো লোকজন আর নেই।

গত বুধবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে উপজেলার বেণীপুর গ্রামের সাজ্জাদ আলীর বাড়ি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সকাল ৮টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের শুরুতেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দেয়াল ধসিয়ে দিতে মাটির তৈরি ওই বাড়িতে পানি দিতে শুরু করেন। এ সময় জঙ্গিরা বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটালে নারীসহ একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হন। এ সময় ওই পরিবারের দুই শিশুকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অভিযানে নিহত হয়েছেন সাজ্জাদ আলী মিষ্টু (৫০), তাঁর স্ত্রী বেলী বেগম (৪৫), ছেলে আল-আমিন (২০) ও মেয়ে কারিমা খাতুন (১৭)। কিন্তু তাঁদের কারোরই লাশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন নিহত সাজ্জাদের মা মারজাহান বিবি (৮০)।

আজ সকালে বাড়ির সামনে পড়ে থাকা পাঁচটি লাশের সুরতহাল তৈরি করেছে সিআইডি। সেখান থেকে লাশগুলো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। স্থানীয় পরিবহন দুটি ভটভটি সেখানে রাখা হয়েছে লাশগুলো নেওয়ার জন্য।

‘অপারেশন সান ডেভিল’-এ অংশ নিতে ঢাকা থেকে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এখানে এসে পৌঁছে। কিন্তু আলো-স্বল্পতার কারণে অভিযান শুরু করতে পারেনি।

এদিকে সাজ্জাদ আলী মিষ্টুর মা মারজাহান বিবি জানিয়েছেন, তিনি পরিবারের সদস্যদের লাশ গ্রহণ করবেন না।

মারজাহান বিবি বলেন, মানুষ হিসেবে সবার জন্যই মন কাঁদছে। কিন্তু কোনো দেশবিরোধী সন্তানের লাশ গ্রহণ করবেন না তিনি। মারজাহান বিবি মনে করেন, কেউ খারাপ কাজ করলে তাঁর শাস্তি হয়, তাঁর ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা তেমন শাস্তিই পেয়েছে।

মারজাহান বিবি জানান, তিনি লাশ নেবেন কি-না, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁর কাছে এখনো কিছু জানতে চায়নি। তবে জানতে চাইলে তিনি সাফ জানিয়ে দেবেন, কারো লাশ তিনি নেবেন না।