ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে বেড়িবাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের সীমান্তবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙে ৬টি গ্রামে প্রায় শতাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কালিন্দী নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বসন্তপুর বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন হাড়দ্দহা ৫নং পোল্ডারের ১নং স্লুইজ গেটের পাশে ৩টি পয়েন্টে ভেঙে যায়। ফলে লোকালয়ে নদীর পানি ঢুকে বসতবাড়ি, সবজি ক্ষেত তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে কয়েক শতাধিক চিংড়ির ঘের।
খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন খান সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে দ্রুত বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেন।
সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসীরা জানান, পূর্ণিমার সময় সাধারণত জোয়ার-ভাটার পানির উচ্চতা এক-দুই ফুট বাড়ে। কিন্তু এবার এই পূর্ণিমায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে নদ-নদীর পানির উচ্চতা চার থেকে পাঁচ ফুট বেড়েছে। ফলে কিছু কিছু এলাকায় বাঁধ উপচে পানি ভেতরে প্রবেশ করছে। এতে হাড়দ্দহা, চিংড়া, চাকদাহ, বসন্তপুর, শীতলপুর সহ ৬টি গ্রামে ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার হোঙ্গলডাঙ্গা মৌজার ২নং স্লুইজ গেটের অবস্থাও খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। এটি ভেঙে গেলে আরও ৪-৫টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করেন এলাকাবাসী।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার আরিজুল ইসলাম, আ. মান্নান, সিরাজুল ইসলাম, ফজলুর রহমান, শফিকুল, আব্দুলাহসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগের সুরে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন টেকসই বাঁধ তৈরি করেন না। এমনকি যখন বাঁধ ভেঙে যায় তখন পর্যন্ত এসব কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বারবার বলার সত্তেও কোনো কাজে আসেনি তারা। অবশেষে বাঁধ ভেঙে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে গ্রামবাসীরা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে প্রতিবারই ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত করে থাকেন।
এলাকায় মজবুত টেকসই বাঁধ তৈরির দাবী জানিয়েছেন এসব গ্রামবাসী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ আলাউদ্দীন সোহেল বলেন, জোয়ারে নদীতে পানি ফুলে ফেঁপে উঠেছে। ঘুর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত না হানলেও দূর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এখন বাঁধ রক্ষার কাজ করা হচ্ছে।
বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি খোঁজখবর নিতে কালিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী তন্ময় হালদারের ব্যবহারিত ০১৭৪২৪০৩৪৮৫ মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও বন্ধ বলায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। যেসব লোকালয়ে পানি ঢুকেছে, সেখানে কাজ শুরু হয়েছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সহায়তা প্রদানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন