চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ইয়াসমিন হত্যাকান্ড : অধিকতর তদন্তে সিআইডি
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আলোচিত ইয়াসমিন আক্তার এ্যানি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে থানা পুলিশ। প্রতিবেদনে, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোকারম উদ্দিন ও রতন চৌধুরীসহ ১৭ আসামীকে বাদ দিয়ে ২ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন।
কিন্তু যথাযথ তথ্য প্রমাণ হত্যার রহস্য উম্মোচন না হওয়ায় আদালত এ প্রতিবেদন গৃহিত না করে অধিকতর তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) কে আদেশ দিয়েছেন।
একই সাথে তড়িগড়ি করে দেওয়া এ পুলিশের প্রত্যাখ্যান করেছেন মামলার বাদি রোকসানা বেগম। বাদির পক্ষে আইনজীবী আদালতে নারাজি দাখিল করেছেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে মামলার বাদি ও শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের সাধারণ লোকজন প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন বলে জানান।
বোয়ালখালীর শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন।
জানা যায়, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া মোহাম্মদ মোকারম আলোচিত ইয়াছমিন আক্তার এ্যানী হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি হয়।
গত ৩ আগস্ট উপজেলার খরন্দীপ জৈষ্ঠপুরা বাড়িতে এ্যানীকে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়। ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ্যানীর মা রোকসানা আক্তার বাদি হয়ে ১৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা ১২৯/২১ দায়ের করেন।
পরে এজাহার হিসেবে হত্যা মামলা ২১/২১৩ বোয়ালখালী থানায় নথিভ‚ক্ত হয়। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ ঢাকা ফৌ. মিছ মামলা নং-৩২২৭৮/২১ এর আলোকে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন দিলেও তা বহু আগেই মেয়াদ শেষ হয়। এরমধ্যে তিন মাস যেতে না যেতেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালখালী থানার এসআই সুমন দে গত ১৭ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
এতে মোকারম উদ্দিন, রতন চৌধুরীসহ ১৭ আসামীকে বাদ দিয়ে ২ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। বাদিপক্ষের আইনজীবি পহেলা নভেম্বর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (চট্টগ্রাম) দাখিলকৃত এক তরফা মিথ্যা যোগসাজেসী প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি ও ৬ সপ্তাহের জামিন বাতিল করে সকল আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি ফরোয়ানা ইস্যুর আবেদন করেন।
গ্রেফতার আসামি বাবলু দে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে এজাহারনামীয় আসামীদের বিরুদ্ধে ভিকটিম ইয়াসমিনকে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলার তথ্য আসলেও তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের নাম বাদ দেন চার্জশিটে।
একজন মুসলিম গৃহবধুকে হিন্দু রীতিতে পুড়িয়ে ফেলায় মামলাটি সিআইডিকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। পাশাপাশি বোয়ালখালী থানার কতৃক দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন গৃহিত হলো না বলে গত ২১ তারিখে আদেশ দেন।
ফলে, চার্জশিট গৃহীত না হওয়া ও হাইকোর্ট জামিন মেয়াদ শেষ হওয়ায় এজাহারনামীয় পলাতক আসামী মোহাম্মদ মোকারম এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে বাদি।
বাদিপক্ষের আইনজীবী ও বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী জিয়া হাবিব আহসান জানান, ‘একজন মুসলিম নারীকে হিন্দু রীতিতে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। অথচ ধৃত আসামি বাবলু দে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে অনেকের নাম প্রকাশ করলেও পুলিশী প্রতিবেদনে তা আসেনি। ফলে, নারাজি আবেদন করায় মামলাটি সিআইডি চট্টগ্রাম জেলাকে পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন