চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নিজকক্ষে সিলিং ফ্যানে সাথে ঝুলছিলেন গৃহবধূ
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নিজকক্ষ থেকে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় নুসরাত জাহান মাহিয়া (১৯) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৬ জুলাই) সকালে উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়াহেদপুর এলাকার আবু তাহেরের বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নুসরাত দক্ষিণ ওয়াহেদপুর এলাকার ওমান প্রবাসী মো: তসলিমের স্ত্রী ও উপজেলার ১২নং খৈয়াছড়া ইউনিয়নের পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের সাহাব উদ্দিনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার পারিবারে স্বজনদের সাথে বিবাহ অনুষ্ঠানে গিয়িছিলেন নুসরাত সেখান থেকে ফিরে গৃহস্থলী কাজ শেষে স্বামী সঙ্গে কথা বলেছিলেন। রাতের খাবার খেতে পরিবারে সদস্যরা ডাকলেও না খেয়ে নুসরাত তার ভাসুরের মেয়ে সামিরা (৫) কে নিয়ে ঘুমাতে নিজকক্ষে যান। সকালে অনেকবার ডাকাডাকির পর এক পর্যায়ে সামিরা (ভাসুরে মেয়ে) দরজা খুললে পরিবারের লোকজন ভেতরে ঢুকে ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় নুসরাতের মরদেহ ঝুলতে দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে সকাল ১০টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নুসরাতের বাবা আনসার সদস্য সাহাব উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে মেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দিয়েছে। আমার মেয়ের লাশ প্লোরে আর খাটের এক পাশে লাগানো উপরে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেচানো অবস্থায় ঝুলছিল। ফ্যানের উচ্চতা বেশি ছিল না। ফাঁস লাগালেতো একে বারে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ দেখতাম।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালে আমার মেয়ের সাথে ওমান প্রবাসী তসলিমের বিয়ে হয়। বিয়ের তিন মাসের মাথায় জামাই প্রবাসে চলে যায়। তাদের সংসার প্রথমে ভালো চলে। পরে বিভিন্ন সময় পরিবারের সবার সাথে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। দেনাপাওনা নিয়ে মেয়ের সাথে ঝামেলা করতো। আমার মেয়ের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাঠন করে দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।
নুসরাতের শ্বশুর আবু তাহের অভিযোগে বিষয় অস্বীকার করে বলেন, খুব সুন্দর চলছিল আমার ছেলে তসলিমের সংসার। গতকাল শুক্রবার তিন ছেলের বউসহ পরিবারিক অনুষ্ঠানে যাই। সেখান থেকে এসে বউমা আমার ছেলে সাথে কথাও বলেছে। হঠৎ কেনো সে আত্মহত্যা করলো বুজতে পাছি না। আমার ছেলে আর ছেলের বউয়ের সাথে কোন ঝগড়াবিবদ ছিল না। থাকলে তো একটু হলেও শুনতাম। দেনাপাওনা নিয়েও ছেলের শুশুর বাড়ি লোক জনের সাথে বিবাদ ছিলনা।
ওয়াহেদপুর পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল কবির ফিরোজ বলেন, শনিবার সকালে আমাকে খবর দেয়ার পর ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। পরিবারের সাথে কথা বলে জানতে পারি, গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। আমি থানা পুলিশকে মারা যাওয়ার বিষয়টি অবহিত করেছি।
নিজামপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মাসুদ খাঁন জানান, খবর পেয়ে দক্ষিণ ওয়াহেদপুর এলাকার একটি বাড়ির নিজ কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছি। লাশের সুরতহাল করে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠানো হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন