পালিয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগীরা

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে প্রবাসীর পরিবারকে উচ্ছেদ করে জায়গা দখল

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক প্রবাসীর পরিবারকে উচ্ছেদ করে জায়গা দখল করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী পরিবার স্থানীয় জোরারগঞ্জ থানায় ও মিরসরাইয়ে অবস্থিত সেনাক্যাম্পে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি বলে দাবী করেন।

উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের কালা টিলার উপর এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী ইতালী প্রবাসী খোরশেদ মিয়ার পরিবার সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে ভিটেবাড়ি ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) মিরসরাই প্রেসক্লাবে এর প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী প্রবাসীর পরিবার।

প্রবাসী খোরশেদ মিয়ার ছোট ভাই মো. ছানা উল্লাহ নুরী বলেন, আমরা পৈত্রিক সূত্রে মালিকানাধীন উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের কালা টিলার উপর দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছি। ওই স্থানে আমার বড় ভাই খোরশেদ মিয়ার বসত বাড়ি রয়েছে।

গত ৫ আগস্ট দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপি নামধারী মাহমুদুল হক, আনোয়ার হোসেন, আজিজুুল হক, সাইদুল হক, নিজাম উদ্দিন, জাহেদুল ইসলাম, মো. হাসান সহ আরো কয়েকজন ৯ আগস্ট দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার ভাইয়ের বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করে।

এসময় তারা বসতবাড়ি, রান্না ঘর ভাংচুর করে আসবাবপত্র, ২ ভরি ৮ আনা স্বর্ণ, নগদ ৩ লক্ষ টাকা সহ মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমরা ছোট বোন নুর জাহান বেগম বাদী হয়ে মিরসরাইয়ে অবস্থিত সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিলে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সত্যতা পান এবং অভিযুক্তদের মধ্যে মো. হাসান নামে একজনকে আটক করে নিয়ে আসেন।

পরদিন ১০ আগস্ট উভয়পক্ষকে সেনা ক্যাম্পে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হলে আমরা আসলেও প্রতিপক্ষের লোকজন উপস্থিত হয়নি। এসময় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদেরকে উপজেলা সহকারি কমিশনারের (ভূমি) সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। সেখানে যোগাযোগ করেও কোন সুফল পাইনি।

তিনি আরো বলেন, গত ২ সেপ্টেম্বর বসত বাড়ি ভাংচুর, হামলা ও লুটপাটের অভিযোগে আমার ছোট বোন নুর জাহান বেগম বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরদিন এসআই আবদুল কাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয়পক্ষকে থানায় ডেকে শালিসী বৈঠক করেন। সেখানেও প্রতিপক্ষের লোকজন পুলিশের সামনে আমাদের উপর চড়াও হন।

প্রতিপক্ষের লোকজন আইনকে তোয়াক্কা না করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাহারা বসিয়ে আমাদের জায়গায় জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ করছেন। এর আগে জায়গার মালিকানা নিয়ে ২০২১ সালের ২৫ মার্চ চট্টগ্রাম যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে মামলা নং ১১৭ দায়ের করি। যা বর্তমানে বিচারাধীন।

অভিযুক্ত নিজাম উদ্দিন প্রবাসী খোরশেদ মিয়ার বসত বাড়ি ভাংচুরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই জায়গাটির আমরা ক্রয়সূত্রে মালিক। প্রবাসী খোরশেদ মিয়া ও তার ছোট ভাই মো. ছানা উল্লাহ নুরী সহ কতিপয় ব্যক্তি তা এতদিন দখল করে রেখেছিলেন।

জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল কাদের বলেন, বসতবাড়ি ভাংচুর ও হামলায় ঘটনায় দেওয়া অভিযোগ তদন্তে গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। বাদী ও বিবাদীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। নতুন করে দখল ও হামলার বিষয়টি ভূমি সংক্রান্ত হওয়ায় বাদী পক্ষকে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।