চট্টগ্রামে যুবদল নেতার নির্দেশে বিএসআরএমের স্ক্রাপ মহাসড়কে, যান চলাচল ব্যাহত

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে বিএসআরএম ইস্পাত ফ্যাক্টরীর স্ক্রাপ (ডাস্ট) জোরপূর্বক আনলোড করার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের সোনাপাহাড় এলাকায় অবস্থিত বিএসআরএম ইস্পাত ফ্যাক্টরী থেকে স্ক্রাপ বোঝায় ড্র্রাম ট্রাক বের হওয়ার পর মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী অংশে সোনাপাহাড় থেকে ঠাকুরদিঘী এলাকায় জোরারগঞ্জ থানা যুবদলের আহবায়ক সিরাজুল ইসলামের নির্দেশে ড্রাম ট্রাকের চালককে অস্ত্রের মুখে জিম্মী করে স্ক্রাপগুলো (ডাস্ট) ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেন মক্কা এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মো. নুর নবী। এতে করে ওই ব্যবসায়ীর প্রায় ৩০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্ক্রাপের মালিক মক্কা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত¡াধিকারী মো. নুর নবী অভিযোগ করেন, ‘বুধবার সন্ধ্যায় বিএসআরএম ফ্যাক্টরী থেকে ১২ টি ড্রাম ট্রাকে স্ক্রাপ বোঝায় করে সীতাকুন্ডের ভাটিয়ারি নিয়ে যাচ্ছিলো আমার ড্রাইভাররা। এসময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্পটে জোরারগঞ্জ থানা যুবদলের আহবায়ক সিরাজের নির্দেশে ৭০ থেকে ৮০ জন সন্ত্রাসী গাড়ির চালকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মী করে সব মালামাল সোনাপাহাড় থেকে ঠাকুরদিঘী এলাকায় আনলোড করে ফেলে।

স্ক্রাপগুলোর মধ্যে লোহা, পিতল, তামা সহ বিভিন্ন ধাতব বস্তু থাকে। যেগুলো ড্রাস্ট থেকে বাছাই করে আলাদা করা হয়। এরআগে গত ১৫ জানুয়ারি ও ২০ জানুয়ারি সিরাজের আত্মীয় জামালের নেতৃত্বে আমার ৭ ড্রাম ট্রাক স্ক্রাপ লুট করে নিয়ে যায় তারা। বিএসআরএম ফ্যাক্টরীতে স্ক্রাপ ব্যবসা তারা ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না বলে তারা আমাকে হুমকি দেয়।’

এরআগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি আমার মালামাল নেওয়ার জন্য নিরাপত্তা চেয়ে জোরারগঞ্জ, মিরসরাই ও সীতাকুন্ড থানায় লিখিতভাবে আবেদন করেছি। কিন্তু থানা পুলিশ কোন ধরনের সহযোগিতা করেনি। বুধবারের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

জোরারগঞ্জ থানা যুবদলের আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মক্কা এন্টারপ্রাইজের স্ক্রাপ আনলোডের ঘটনায় আমি কোনভাবে জড়িতনা। বুধবার সন্ধ্যায় জোরারগঞ্জ থানার ওসিকে বিদায় জানাতে আমি থানায় উপস্থিত ছিলাম।

জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, ‘মালামাল নেওয়ার সময় পুলিশের টিম ড্রাম ট্রাকগুলোর সামনে ছিলো। কিন্তু লুটকারীদের সাথে ড্রাম ট্রাক চালকদের হয়তো যোগসাজস ছিলো ওকারণে তারা মহাসড়কের পাশে আনলোড করে ফেলে। মহাসড়ক থেকে ড্রাস্টগুলো সরানোর জন্য আমি হাইওয়ে পুলিশকে বলেছি।’

বিএসআরএম ইস্পাত কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘মক্কা এন্টারপ্রাইজ সোনাপাহাড় কারখানার ডাস্ট কেনার জন্য ডিও আনলে গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যায় কারখানা থেকে তা ছাড় দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী কারখানা থেকে মাল বের করার পর ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে তার গোডাউনে নিয়ে আনলোড করবেন।

ডাস্টগুলো মহাসড়কে ফেলে যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটনো কোনভাবে কাম্য নয়। তাছাড়া সিরাজ উদ্দিনের নামে এখন কোন ডিও নেই। তিনি কেন মক্কা এন্টার প্রাইজের গাড়ীতে বাধা দিয়েছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই। মহাসড়ক থেকে ডাস্ট সরানোর বিষয়ে আমি মক্কা এন্টারপ্রাইজের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেবো।’