চবিতে কাফনের কাপড় পরে দিয়াজের মায়ের অবস্থান

ছেলে হত্যার এক বছর পরও হত্যাকারীদের কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মা।

সোমবার সকাল ৯টা থেকে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেন। এ সময় তার পরনে ছিল কাফনের কাপড়।

অবস্থান কর্মসূচি শুরুর সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকজন জাহেদা আমিন চৌধুরীকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি কান্না করতে থাকেন।

দিয়াজ হত্যাকারীদের গ্রেফতার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ইফতেখার উদ্দিন ও প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তিনি এ কর্মসূচি পালন করে যাবেন বলে জানান।

গত বছরের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর সড়কের আবাসিক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে দিয়াজের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।

ঘটনার চার দিন পর ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন ও ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুসহ ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী।

ওই মামলার আসামিরা ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জামশেদুল আলম চৌধুরী, সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ সভাপতি আলমগীর টিপু, কর্মী রাশেদুল আলম জিশান, আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমান।

দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। সকালে অবস্থান কর্মসূচিতে বসার পর পরই সেখানে ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা দিয়াজের মাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি ছিলেন অনড়।

এ সময় দিয়াজের মা কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকেন, দিয়াজ হত্যার এক বছর পার হলেও একজন আসামিও ধরা পড়েনি। দিয়াজকে ছাড়া তিনিও বাঁচতে চান না। এটি একটি অভিশপ্ত জীবন। এখানে খুনিরা পুরস্কৃত হয়।

যারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাদের চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন বলেও অভিযোগ করেন দিয়াজের মা। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো মারপিট হলে এক ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মুক্তিযোদ্ধা এবং আওয়ামী পরিবারের সন্তান হয়েও দিয়াজ হত্যার বিচার শুরু হয়নি। এক বছরে একজন আসামিও গ্রেফতার হয়নি। বরং অপরাধীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মাহফুজুর রহমান খোকন দুপুর ১২টার দিকে বলেন, ‘আজ সকালে দিয়াজের মা এখানে এসে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেন। এ সময় তিনি কাফনের কাপড় পরে ছিলেন। তার হাতে একটি ব্যানারও ছিল। সেখানে দিয়াজ হত্যাকারীদের গ্রেফতার এবং বিচারের কথা লেখা আছে।’