চরম তাপমাত্রার শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত গতিতে জনসংখ্যা বাড়ছে শহরগুলোতে। এ দুটির প্রভাবে মারাত্মক হয়ে উঠছে সেখানকার তাপমাত্রা। এই চরম উষ্ণতার কারণে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ঢাকা।
সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় আশঙ্কাজনক এ তথ্য উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা, ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনা ও ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার একদল গবেষক যৌথভাবে গবেষণাটি করেছে।
গত সোমবার (৪ অক্টোবর) বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস-এ ওই গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ১৯৮৩ সালে ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ছিল ৪০ লাখ। কিন্তু এখন ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ বসবাস করছে বাংলাদেশের রাজধানীতে।
চরম তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায়র উপরের দিকে ঠাঁই হয়েছে বাংলাদেশের। এ তালিকায় শীর্ষস্থানে ভারত, এরপরই বাংলাদেশ।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চরম উষ্ণতার কারণে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গবেষকরা দেখেছেন, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার শহরগুলোতে বসবাসরত দরিদ্র মানুষ নাগরিক সুবিধার অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত।
গবেষকরা ১৯৮৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা ৩৩ বছর বিশ্বের ১৩ হাজার শহরে উষ্ণতা ও আর্দ্রতা পর্যবেক্ষণ করেছেন। যেসব শহরে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর থাকে, তাদেরই চরম তাপমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এরপর অন্য শহরগুলোর বাসিন্দাদের তথ্যের সঙ্গে সেগুলো তুলনা করা হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, শহরগুলোতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু অনেক জায়গায় জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির কারণে সেখানকার তাপমাত্রা চরম হয়ে উঠছে। বিশেষ করে, গত কয়েক দশকে লাখ লাখ মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরে আসায় সেখানে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে তাপমাত্রা।
গবেষক দলের প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ ইউনিভার্সিটির আর্থ ইনস্টিটিউটের গবেষক ক্যাসকেড টুহলস্কি বলেন, চরম তাপমাত্রার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মানুষের কর্মক্ষমতার ওপর। ফলে তাদের আয়-রোজগার কমে যাচ্ছে, স্বাস্থ্যেরও অবনতি হচ্ছে।
চরম তাপমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত শহরের তালিকায় ঢাকার পরই ভারতের দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই ও থাইল্যান্ডের ব্যাংকক। রয়েছে চীনের সাংহাই, গুয়াংজু, মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের শহর দুবাই। এসব শহরে গত ৩২ বছরে উষ্ণতা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব ৩৭ শতাংশ, বাকি ৬৩ শতাংশের জন্য দায়ী স্থানীয় কারণ।
সূত্র: এএফপি, বিবিসি বাংলা
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন