চলতি বছরের ডিসেম্বরে অবসরে যাবেন অর্থমন্ত্রী


ক্যারিয়ারে বহুদিন থাকলে পচন আসে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরেই তিনি অবসরে যাবে।
শনিবার রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে শিক্ষাখাত এবং একের পর এক কেলেঙ্কারিতে ব্যাংক খাত ‘ধ্বংস’ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ওই সমালোচনার একদিন পরেই অর্থমন্ত্রী সুনির্দিষ্টভাবে অবসরের ঘোষণা দিলেন।
এ বিষয়ে বক্তব্যের শুরুতেই আর্থিক খাতের অবস্থা ভালো কি-না সে ব্যাপারে প্রশ্ন আছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সকালে পত্রিকায় দেখলাম এ দেশের একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিয়েছেন দু’জন ব্যক্তিকে যেখানে দায়িত্বটা গুরুত্বপূর্ণ না, সেখানে পাঠিয়ে দিতে। সে দু’জন ব্যক্তির একজন আমার বন্ধু, আমাদের সুযোগ্য শিক্ষামন্ত্রী। আর দুই নম্বর ব্যক্তি আমি, আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী।’
‘তিনি (বদরুদ্দোজা চৌধুরী) বলেছেন, হ্যাঁ দেশে কিছু কাজটাজ করেছেন, কিন্তু অবসর না নেন তাহলে নিরাপদ মন্ত্রণালয়ের কোথাও পাঠিয়ে দিতে। আমার প্রথমে মনে হয়েছিল আজকে এখানে বক্তব্য করবো রিটায়ারমেন্ট’র ওপরে। রিটায়ারমেন্ট কখন করা উচিত এবং রিটায়ারমেন্ট কিভাবে নেয়া উচিত, সেই সম্বন্ধে আজকে বক্তব্যটি রাখবো। তার আর একটি বিশেষ কারণ হলো আমি এখন সত্যিকারভাবে জানি, আমি রিটায়ারমেন্ট করতে যাচ্ছি। এই বছরেই রিটায়ারমেন্ট করবো, ডিসেম্বরে’ বলেন মুহিত।
অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে বদরুদ্দোজা চৌধুরী শুক্রবার বলেন, এক সময় ব্রাইট স্টুডেন্ট ছিলেন। যে কারণে হোক তিনি প্রশাসন চালাতে ব্যর্থ হয়েছেন। একটা ব্যাংকও ঠিকমতো চলে না, দেখতে পারেন নাই, ধরতে পারেন নাই, শাস্তি দিতে পারেন নাই, কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন নাই। এরপরও যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে ক্ষমা করে দেন। ক্ষমা করা উত্তম কিন্তু উত্তমের পন্থা ছেড়ে দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমাদের অর্থনীতি যেন ধ্বংস না হয়ে যায়।
সাবেক রাষ্ট্রপতির এই সমালোচনার প্রতি ইঙ্গিত করে মুহিত বলেন, ‘বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মনে হয় সে রকম রিটায়ারমেন্টের ধারণা নেই। না হলে তাকেই উপদেশ দিতে চেয়েছিলাম যে কোনো একটা সময় আসে বোধায় তখন রিটায়ারমেন্ট করাটাই আমাদের জন্য ভালো এবং রিটায়ারমেন্টে যেভাবে থাকা যায়, সেভাবেই আমাদের থাকা উচিত।’
‘ক্যারিয়ারে বহুদিন থাকলে নিশ্চয় পচন আসে। সেই পচনের পরিণতিটা মানুষের মধ্যে বেশি পরিমাণে…। সুতরাং আমরাও সে রকম ধরনের চিন্তা-ভাবনা করি। এইবারে আমি সত্যিকারভাবে অবসরে যাচ্ছি, আগামী ডিসেম্বরে (১১ মাস বাকি আছে)’ বলেন অর্থমন্ত্রী।
ব্যাংক সেবার বিষয়ে মুহিত বলেন, আমাদের দেশে ব্যাংকিং সার্ভিস ততটা প্রসারিত হয়নি। আমাদের ব্যাংকের শাখা আরও বাড়ানো উচিত। কারণ ব্যাংকে যতি বেশি লোককে জড়িত করতে পরি, ততই আর্থিক কর্মকাণ্ড বেশি শক্তিশালী হবে। আর্থিক কর্মকাণ্ড যত শক্তিশালী হয়, ততই দেশের উন্নয়ন হয়।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন