চলতি মাসে প্রাথমিকে আরও ১৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক ও সহকারী শিক্ষক পদে আরও ১৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে স্নাতক (অনার্স) পাস হতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি- ৪) আওতাভুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আগামী সপ্তাহে প্রকাশের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) গিয়াস উদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকশূন্য হয়ে গেছে। শিক্ষকশূন্যের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর আলোকে নতুন করে প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
তিনি জানান, ১৭ হাজার শিক্ষকের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকপর্যায়ে ১০ হাজার ও সহকারী শিক্ষক পদে সাত হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে (ডিপিই) নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হলে আগামী সপ্তাহে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে বলেও তিনি জানান।
জানা গেছে, গত রোববার (৩ মার্চ) সংশোধনী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে আবেদনকারীর যোগ্যতা স্নাতক পাসের কথা বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদিত নিয়োগ বিধিমালা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ফলে এ নিয়োগ থেকেই আবেদনকারীকে স্নাতক পাস হতে হবে।
এর আগে এইচএসসি পাস মেয়েরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারলেও সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী প্রার্থীকে অবশ্যই স্নাতক (অনার্স) পাস হতে হবে। তবে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের ৬০ ভাগ কোটা বহাল রয়েছে।
এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্ব খাতে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দিতে গত বছরের জুনে ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ- ২০১৮’ বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে ডিপিই। ওই বছরের ১ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়। এ সময়ের মধ্যে ২৪ লাখের বেশি আবেদন জমা হয়।
জানা গেছে, রেকর্ড সংখ্যক আবেদনকারী হওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে বিপাকে পড়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এ কারণে কয়েক দফায় লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করেও তা পিছিয়ে দেয়া হয়। সর্বশেষ আগামী ১৫ মার্চ থেকে লিখিত পরীক্ষা শুরু করতে সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ১৩ মার্চ ‘জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ- ২০১৯’ পালন করার সিদ্ধান্ত হওয়ায় আবারও পিছিয়ে যায় নিয়োগ পরীক্ষা। শতভাগ প্রস্তুতি থাকলেও তা পিছিয়ে দেয়া হয়।
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন বলেও জানা গেছে। বর্তমানে এ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে সবাই ব্যস্ত রয়েছেন।
ডিইপি’র নিয়োগ শাখার কর্মকর্তারা জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সারাদেশে প্রায় ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য হয়েছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় আট হাজার এবং সহকারী শিক্ষক পদে প্রায় ২২ হাজার পদ রয়েছে। গত এক বছর ধরে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হলেও এখনও নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
কর্মকর্তারা বলেন, যেহেতু পিইডিপি- ৪ এর আওতায় এক লাখ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। এর আলোকেই নতুন আরেকটি নিয়োগ কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার জন্য সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত থাকলেও জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ- ২০১৯ আয়োজন করায় তা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে ১৩ মার্চের পর মন্ত্রণালয়ে একটি সভা করে লিখিত পরীক্ষা শুরু করতে পরবর্তী দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হবে। পাশাপাশি নতুন করে ১৭ হাজার নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে। এসব শিক্ষক পিইডিপি- ৪ আওতাভুক্ত হবে। প্রকল্প শেষে তাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, একটি নিয়োগের সঙ্গে আরেকটি নিয়োগ শুরু হলে এর কার্যক্রম এগিয়ে থাকে। যেহেতু আমাদের অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকশূন্য, অনেকে অবসরে গেছেন। এসব কারণে দুটি নিয়োগ কার্যক্রম একই সঙ্গে পরিচালিত হবে বলেও জানান তিনি।
সংশোধিত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী এ নিয়োগ কার্যক্রম থেকেই আবেদনকারীকে স্নাতক (অনার্স) পাস হতে হবে বলেও জানান তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন