চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যশোরের রাজগঞ্জ বাজারের এক ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী শান্তা এন্টারপ্রাইজের মালিক মিনা পারভীন। সোমবার বিকালে রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান- আমার স্বামী মোঃ বাবর আলী বাবু উপজেলার ৯নং ঝাঁপা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির দীর্ঘদিনের সভাপতি।
আমি একজন দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত নারী উদ্যোতা ও ব্যবসায়ী। আমি রাজগঞ্জ বাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী ছিলাম। চাঁদাবাজদের ধারাবাহিক অত্যাচারে আমি আজ স্বর্বশান্ত হয়েগেছি। উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের সন্ত্রাসী বাহিনী কামরুল, মাহাবুর মেম্বার ও রওশন জামান টুটুল এরা আমাকে এবং আমার স্বামী মোঃ বাবর আলী বাবুকে বিভিন্ন সময় জিম্মি করে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মিনা পারভীন বলেন- আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবধি বিভিন্ন সময় ভয়ভীতিসহ চাঁদার দাবী করতে থাকে উল্লেখিতরা। তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বাসায় এসে পরিবারের উপর হামলা করে শারীরিক নির্যাতন চালাতো। তারা বিভিন্ন সময় আমার এবং আমার স্বামী বাবর আলীকে আটকিয়ে রেখে এবং আমার পরিবারকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে কয়েক বার দফায় দফায় মোটা অংকের চাঁদা নিয়েছে।
আমার বাসাতে কয়েক বার হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে এবং আমার দুই মেয়েকে অপহরণের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করাটা ছিলো তাদের প্রধান অস্ত্র। রাজনৈতিক প্রতিহিংসামুলক কারণে, মামলার ভয় দেখিয়ে দফায় দফায় চাঁদা নিয়েছে তারা। চাঁদাবাজরা হলো- চন্ডিপুর গ্রামের মৃত- গোলাম মোস্তফা দফাদারের ছেলে কামরুল ইসলাম, মৃত- মতলেব সরদারের ছেলে মাহাবুর মেম্বার ও মৃত- মুজিবর রহমানের ছেলে রওশন জামান টুটুল।
মিনা পারভীন আরো বলেন- বিগত ১০/০১/২০২০ তারিখে রাজগঞ্জ বাজার থেকে ব্যবসায়ীক কাজ শেষ করে রাত ১০টার দিকে বাসায় যাওয়ার পথে আমি এবং আমার স্বামীকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে কামরুলের রামনাথপুরস্থ নিজের মাছের ঘেরে নিয়ে যায় এবং আমার স্বামীর কাছে থাকা ৭ লক্ষ টাকা জোরপূর্বক নিয়ে ছেড়ে দেয় এবং কারো না জানাতে হুমকি দেয়।
কিছুদিন পরে মাহাবুর মেম্বার, কামরুল ও টুটুল তার সহযোগিরা আমার স্বামীকে বিগত ২৫/০১/২০২০ তারিখে বাসা থেকে উঠায়ে নিয়ে চন্ডিপুর সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনে রাতভর আটকে রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও মানুষিক অত্যাচার করে এবং মেরে লাশ গুম করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ১০ লক্ষ টাকা আদায় করে।
এরপর একইভাবে বিগত ১৩/০২/২০২০ তারিখে আমার বাসা থেকে আমার স্বামীকে আবারো উঠিয়ে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করে। এভাবে আমাকে সর্বশান্ত করে দেয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় দফায় দফায় চাঁদা চাইতে থাকে। দাবীকৃত চাঁদার দাবীতে উল্লেখিত ব্যক্তিরা এসে আমার বাসায় হামলা করে আমার এবং আমার স্বামীকে বেধড়ক মারপিট করে।
এক পর্যায় আমি, আমার স্বামী এবং সন্তানদের নিয়ে চন্ডিপুরের বাসা ছাড়তে বাধ্য হই এবং নিরোপায় হয়ে ওদের অত্যাচারে আজও পথেপথে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আজ আমার ভিটে-বাড়ি, ব্যবসা-বানিজ্য কিছুই নাই। আমি আজ সর্বশান্ত। এখনো উল্লেখিত বাহিনী আমাদের জানে মেরে ফেলাসহ বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
আজও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি এ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে আইনী সহযোগিতা চাচ্ছি এবং আমি যাতে আবার আমার ব্যবসা-বানিজ্য চালিয়ে আমার পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিতে থাকতে পারি, সে-ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন