চাঁদের কনার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করলেন প্রধানমন্ত্রী
অবশেষে সমাজসেবা অধিদফতরে চাকরি পাচ্ছেন মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনকারী শারীরিক প্রতিবন্ধী চাঁদের কনা। সরকারি চাকরি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত চেয়ে গত কয়েকদিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছিলেন সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের এই মেয়ে।
এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে আসে। তিনি চাঁদের কনাকে সমাজসেবা অধিদফতরে চাকরি দিতে ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এসেছে। তিনি প্রতিবন্ধী মেয়েটির চাকরির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
চাকরি কবে নাগাদ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটু সময় লাগবে। তবে তার চাকরি হবে।
আওয়ামী লীগের এ উপ-দফতর সম্পাদক বলেন, দেশের অনাগ্রসর জনগোষ্ঠী বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা করেছেন অতীতে কোনো সরকার তা করেনি।
উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত বিয়াড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে চাঁদের কনা (৩১)। শিশুকাল থেকেই তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। কিন্তু হাতের ওপর ভর দিয়ে হেঁটেই ২০১৩ সালে ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। যোগ্যতা অনুযায়ী একটি সরকারি চাকরির জন্য ছুটে বেরিয়েছেন এ দুয়ার থেকে ও দুয়ার। নিরূপায় হয়ে বুধবার (২৬ জুন) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন চাঁদের কনা। চাকরি না হওয়া পর্যন্ত তিনি অনশনেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
তার স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানা যায়, মাত্র নয় মাস বয়সে পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে দুই পায়ের কার্যক্ষমতা হারান চাঁদের কনা। তবুও বাবা-মায়ের সচেতনতা আর তার প্রতিবন্ধিতা জয়ের অদম্য প্রচেষ্টায় চলতে থাকে হাতে হেঁটে পড়ালেখা। তিনি যখন অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী তার স্কুলশিক্ষক মা হাসনা হেনা বেগম মারা যান। এর কয়েক বছর পর তার বাবা ব্রেইন স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে এবং বাবার অসুস্থতাজনিত কারণে তার জীবনে প্রতিবন্ধিতার সঙ্গে নেমে আসে চরম দরিদ্রতা। অবশেষে পড়ালেখার খরচ জোগাতে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সামান্য বেতনে চাকরি নেন তিনি। শত কষ্টের মাঝেও গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে সফলতার সঙ্গে অর্জন করেন উচ্চতর ডিগ্রি।
চাঁদের কনা জানান, সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। অর্জন করেছেন প্রথম বিভাগ। শুধু তাই নয়, পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলেছেন। ভারোত্তোলন থেকে শুরু করে টিভি-রেডিও’তে সংবাদ পাঠ; টিভি প্রোগ্রাম গ্রন্থনা, উপস্থাপনা ও পরিচালনা; নাটক, গল্প ও কবিতা লেখা; অভিনয় করা ও কবিতা আবৃতি করা; গল্প বলা; ছবি আঁকা এবং কম্পিউটারে সব কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন