চীন-আমেরিকার ‘বাণিজ্য যুদ্ধে’ কার ক্ষতি বেশি?
সম্প্রতি চীনা পণ্যের ওপর বিশাল অঙ্কের শুল্ক আরোপের পর ভিন্ন এক যুদ্ধ শুরু হয়েছে চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যে যুদ্ধের নাম দিয়েছে ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’।
শুল্ক আরোপের ঘটনায় কে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে- চীন না আমেরিকা? এ নিয়েও চলছে তুমুল বিতর্ক। তবে বেশিরভাগেরই ধারণা এই যুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দুই দেশই। এমনকি এর জন্য মূল্য দিতে হবে তাদের কিছু মিত্র দেশকেও।
বিশ্লেষকদের ধারণা, এই যুদ্ধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা এবং ভোক্তারাই।
চীনের আমদানি পণ্যের উপর ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কর আরোপের ঘোষণা দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার এক আদেশে সই করেন।
মেধাস্বত্ব চুরির অভিযোগসহ মার্কিন বাজার ধ্বংস চেষ্টার অজুহাতে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তের কথা জানান ট্রাম্প।
ইতিমধ্যে চীনের প্রায় ১৩শ’ পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের তালিকা তৈরি করেছে মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ বিভাগ। চীনও বলে দিয়েছে তারা নিজেদের বাণিজ্য লাভালাভকেই বেশি গুরুত্ব দিবে।
ট্রাম্পের ঘোষণার পরই প্রতিশোধ হিসেবে চীনও আমদানিকৃত কৃষি পণ্যের উপর কর আরোপের চিন্তা ভাবনা করছেন বলে ঘোষণা দেয়। আর চীনই এসব পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার।
বাণিজ্য যুদ্ধ ধাপে ধাপে বাড়লে কে জিতবে কে হারবে? আমেরিকার এই শুল্ক আরোপের ঘটনায় চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল পরিমিত। তারা যদি কৃষিপণ্যের উপর কর আরোপ করে, তাহলে চীনের সবচেয়ে বড় বাজার হারাবে যুক্তরাষ্ট্র। ৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার কর আরোপ করা পণ্যের তালিকায় রয়েছে ফল, ওয়াইন, শুকরের মাংস, রিসাইকেলড অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের পণ্য যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করে। ফলে সেসব পণ্য তৈরি করা শিল্পকারখানাগুলো ক্ষতির মুখোমুখি হবে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র এখনো তাদের কর আরোপের সম্ভাব্য তালিকা প্রকাশ করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে থাকতে পারে কম্পিউটার এবং আরো কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য। এতে চীনের উৎপাদনকারীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। শুধু তাই নয়, এতে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের আরো বেশি অর্থ দিয়ে পণ্য কিনতে হবে।
চীন এসব পণ্য তৈরি করে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো থেকে বিভিন্ন পার্টস এনে। ফলে সেখানেও তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। জাপান, সাউথ কোরিয়া, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো চীনের বন্ধু ও মিত্রদেরও এই বাড়তি করের বোঝা বহন করতে হবে।
সমস্যায় পড়বে যুক্তরাষ্ট্রেরও কিছু কোম্পানি। তার মধ্যে বোয়িং একটি। চীনই তাদের সবচেয়ে বড় বিদেশি ক্রেতা। মার্কিন কৃষকরাও চিন্তিত বলে খবর প্রকাশ করেছে কিছু গণমাধ্যম। কারণ সয়াবিন ও সরঘুম সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়ে থাকে চীনেই।
এর বাইরে নিক, ওয়ালমার্ট ও জেনারেল মোটরও ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন