চুয়াডাঙ্গায় অজ্ঞানপার্টির ৬ সদস্যকে আটক করলো পুলিশ
সমাজ এখন অজ্ঞান পার্টিদের দখলে চলে আসছে। সময় অসময়ের যেকোনো জায়গায়ই তারা অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। সেআলোকে চুয়াডাঙ্গায় নামকরা ডুগডুগি, শিয়ালমারি পশুহাটসহ মোট ১১টি পশুহাটেই অজ্ঞান পার্টিদের প্রধান টার্গেট রয়েছে।
বিশেষ করে ঈদুল আজাহকে কেন্দ্র করে ওইসব পশুহাটে অজ্ঞান পার্টিদের দৌরাত্ম্যে সর্বশান্ত হচ্ছে এ জেলাসহ বিভিন্ন জেলার গরু ব্যবসায়ীরা। এদেরকে প্রতিরোধে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ বাহিনী সতর্কতার সাথে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অজ্ঞানপার্টির সক্রিয় ৬ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
সেসময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করেছে।
আটককৃতরা হলো-জেলার জীবননগর উপজেলার মৃগমারী গ্রামের নওশাদ মন্ডলের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৪৭), দামুড়হুদা উপজেলার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে সালামত (৫৫), বড় দুধ পাতিলা গ্রামের মৃত: গোলাপ মন্ডলের ছেলে হাসেম আলী (৪৮), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারি গ্রামের বিল্লল হোসেনের ছেলে শাহাবুদ্দিন ওরফে সুখচান (৩০), একই উপজেলার সন্তোষপুর গামের মৃত ইসমাইলের ছেলে ইব্রাহিম ওরফে ইব্রা (৫০), ও বাগেরহাট জেলার শরনখোলা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মৃত কাশেম মাঝির ছেলে বাচ্চু মাঝি।
গতকাল শনিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান।
প্রেস ব্রিফিং এ জেলা পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন (ক্রাইম এন্ড অপস) লিখিত বক্তব্যে বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী দামুড়হুদার ডুগডুগি, জীবননগরের শিয়ালমারি পশুহাটসহ মোট ১১টি পশুরহাট। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ডুগডুগি, জীবননগরের শিয়ালমারি, আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ, সদরের সরোজগঞ্জ পশুর হাটগুলো জমজমাট হয়ে ওঠে।
পশুহাটগুলো শুরু হওয়ার সাথেসাথেই প্রায় প্রতি বছরই অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টি প্রতারণাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়।
এছাড়াও পরিবহনগুলোতেও বাসের যাত্রীবেশী অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা টার্গেট করে সাধারণ যাত্রীদের অজ্ঞান করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেওয়ার সংবাদও কম নয়।
জেলায় এসব পশুহাটে ও হাটে আসার পথে গত ১৬ মে ফরিদপুরের ইউনুস শেখ জীবননগরের শিয়ালমারি হাটে, ২৩ মে জীবননগর কালীগঞ্জ সড়কের পশু হাসপাতালের সামনে সানোয়ার হোসেন (৪৫), ৩০ মে আলমডাঙ্গা শমসের আলী শিয়ালমারি হাটে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে।
সর্বশেষ অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা ৩ জুন দামুড়হুদার ডুগডুগির হাটে নোয়াখালীর জসিম উদ্দিনকে টার্গেট করে চেতনা নাশক পুশ করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় হাতে নাতে বাগেরহাটের বাচ্চু মাঝি নামের একজন গ্রেপ্তার হয়। এই ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানার মামলা দায়ের করা হয়।
এ ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গা সদর থানা, জীবননগর থানা, দর্শনা থানা ও দামুড়হুদা থানাসহ চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করতে থাকে এবং তাদেরকে হাতেনাতে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে কৌশলে ফাঁদ পাতা হয়। এই ফাঁদে আটকে পড়ে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় ৬ সদস্য।
এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ এই আন্তঃজেলা অজ্ঞান পার্টি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এটা একটা সংঘবদ্ধ চক্র। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে টার্গেট ভিকটিমকে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
তদন্তকালে আমরা এই চক্রের বেশ কিছু নাম পেয়েছি তাদের চলমান কার্যক্রম মনিটর করা হচ্ছে। এই চক্রের সকল সদস্যকে আইনের আওতায় আনার জন্য সুষ্ঠু তদন্ত এবং গ্রেপ্তার অভিযান চলবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন