চুয়াডাঙ্গায় জিকে সেচ খালেও পানির খরা—কৃষকদের ইউটার্ন
এ দেশে যদি কাউকে দামি মানুষ হিসেবে ভূষিত করা হয়—তাহলে সেই মানুষটি হচ্ছে কৃষক। যার অন্যতম কারণ রয়েছে অতপ্রতঃভাবে জড়িয়ে। যারা ফসল না ফলালে আমরা সবাই আজ না খেয়ে মরতে হতো। অথচ সেই সোনার মানুষের মূল্য তাদেরকে টিকিয়ে রাখার তেমন কোনো গর্জ্য সরকার পক্ষের দেখা যায় না। ফলে কৃষি খাতে নগন্নতা তৈরী হয়েছে বিশাল।
এদিকে, সেচ কাজে পানির কোনো বিকল্পও নেই। তবুও বছরের বারোমাসই গঙ্গা—কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম দীর্ঘ এক যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে গঙ্গা—কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের পাম্প।
এ বছর বোরো মৌসুমের পুরো সময়েই জেলার জিকে সেচ খাল ছিল পানিশূন্য। যে কারণে কৃষকরা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাইরে থেকে পাম্প মেশিন দিয়ে বোরো মৌসুম পার করেছে। এতে করে লাগামহীন হারে খরচ হয়েছে তাদের।
এবার, স্বাভাবিকের চেয়ে তিন—চার গুণ খরচ বেশি হয়েছে কৃষকদের। জিকে সেচ খালের আওতায় আসা কৃষকদের অভিযোগ, অন্তত ১০ থেকে ১২ বছর ধরে কৃষকরা ঠিকভাবে সেচ খালে পানি পাচ্ছেন না। অথচ সেচ কাজে কোনো প্রকার পানির অভাব না থাকে—সে লক্ষ্যেই জিকে সেচ প্রকল্প চালু করা হয়েছিলো। কিন্তু এ বছর বোরো মৌসুমেও পানি দিতে ব্যর্থতা দেখিয়েছে সেচ প্রকল্প।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার মোমিনপুর গ্রামের জনি হোসেন বলেন, ‘খাল ভরাট হয়ে গেছে। অসময়ে আসা অল্প পানিতে মাঝেমধ্যে খালের পানি উপচে পড়ে। আমরা বছরের পর বছর ধরে খাল খনন করতে বলেও কোনো ফায়দা হয়নি। কিছু এলাকায় খাল খনন হয়েছে। যা প্রত্যাশিত নয়। এছাড়া আমাদের এদিকেও খাল খনন করা হয়নি। সেচ খালে পানি ঠিকমতো না থাকার কারণে অনেক কৃষক তাদের চাষাবাদের পদ্ধতি বদলে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন।’
চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫১ সালে প্রাথমিক জরিপের পর ১৯৫৪ সালে জিকে সেচ প্রকল্প অনুমোদন পায়। চালু হয় ১৯৬২—৬৩ সালে। শুরুতে বছরের ১০ মাস (১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ অক্টোবর) দিনরাত ২৪ ঘণ্টা তিনটি পাম্পের মাধ্যমে পানি তোলা হতো। দুই মাস চলতো রক্ষণাবেক্ষণ। ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা খাল ও ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খালের মাধ্যমে সেচ প্রকল্পের পানি কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার ১৩টি উপজেলায় সরবরাহ করা হতো।
পাউবো কর্মকর্তারা জানান, মূলত আমন চাষে পানির ঘাটতি মেটাতে প্রকল্প শুরু হয়েছিল। পরে তা সারা বছরই তিন মৌসুমের কাজে আসছিল। পদ্মার পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় তিন—চার বছর আগে থেকে বোরো মৌসুমে শুধু কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়। চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ বলেন, ‘জিকে সেচ খালে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করি জিকে সেচ খালে পানি সমস্যার সমাধান হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন