চুয়াডাঙ্গায় ভোক্তার অভিযান চলে গেলেই বেড়ে যাচ্ছে শাকসবজির দাম
শীতকালে চাহিদার তুলনায় যেমন সরবরাহও বেশি থাকে তেমনী কাঁচা সবজির দামও কম থাকে। কিন্তু বর্তমানে সেই শীতকালীন মৌসুম চলা স্বত্বেও বাজারে কমছে না যেকোনো সবজির দাম।
বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গার বাজারে আমদানি রপ্তানি ব্যয় একই রকম থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি সবজির দামে ২০-২৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে ভোক্তাদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অথচ বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না টাস্কফোর্স কমিটি গঠনে।
চুয়াডাঙ্গার ডিসি-এসপিসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে অভিযান চলা স্বত্বেও বাজারে কমছে না কোনো জিনিসের দাম। টাস্কফোর্স কমিটির ব্যক্তিরা যখন অভিযানে আসছে ঠিক তখনই কিছুটা স্বাভাবিক থাকছে-তারা চলে গেলেই আবারও বেড়ে যাচ্ছে শাক সবজিসহ মাছ মাংসের দাম। সেইসাথে ছাড় পায়নি মসলাজাতীয় পণ্যের দাম। সেখানেও দামের ফাঁরাক ঘটেছে প্রচুর।
এদিকে গোপন সূত্রে জানা গেছে, রোজা আসলে ব্যবসায়ীরা ডাবল লাভ করে থাকে। আগামী ৪ মাস আছে রোজা। বিশেষ করে রোজাকে সামনে রেখে সরকার জিনিসের দাম না বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে থাকে। কিন্তু সরকারের সেই পরিকল্পনা বা নির্দেশনা মানতে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সেলক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ীরা এখন থেকেই শাক সবজি মসলাজাতীয়সহ নিত্যপণ্যের বেশিরভাগ জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
যাতে করে রোজার মাসে দাম আর বাড়ানো না লাগে। এতে যেমন ব্যবসায়ীরা দ্বিগুণ লাভে লাভবান হচ্ছে। তেমনী ভোক্তাগণ পেষাই হয়ে যাচ্ছে। রাতের ঘুম হারাম হয়েছে মানুষের আর বাজার করার সময় হলেই কপালে ভাঁজ পড়ে বুড়ো চিত্র দেখাচ্ছে তরুণ যুবকদের।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গার বড় বাজারে সব ধরনের সবজির দাম ৬০ টাকার উপরে স্থির চিত্র রয়েছে।
গতকাল শহরের নিচের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আগাম ও শীতকালীন হরেক রকমের সবজি আসতে দেখা যাচ্ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজ। এক কেজি পেঁয়াজের দাম খুচরাপর্যায়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম স্বাভাবিক রয়েছে আদা ও রসুনের। ৪০ টাকা বেড়ে কাঁচা মরিচের দাম ১৪০ টাকা কেজি দরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে।
বেগুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমলেও সপ্তাহের ব্যবধানে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালিন ফুলকপি শুরুতেই বাজারে ৭০ টাকা কেজি। আর শিমের দাম এখনো ৮০ টাকা। কচু ও পটলের দাম ৬০ টাকা। সব ধরনের সবজি মানভেদে কেজিতে এখনো ২০ টাকা বাড়তি রয়েছে। কিন্তু অভিযান গেলে ঠিকই কমে যাচ্ছে দাম।
এদিকে দাম বেড়েছে মসলা জাতীয় পণ্যের। এলাচের কেজিতে ৫০০ টাকা বাড়তি হয়ে ১ কেজি এলাচ সাড়ে ৩ হাজার টাকা। আর অন্যান্য কিছু মসলার দাম কিছুটা স্বাভাবিক। ডিমের দাম কিছুটা কমলেও দাম কমেনি খোলা বাজারের সয়াবিনের তেলের। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১৮২ টাকা। আর দাম আগের মতো ১৬৭ টাকা স্বাভাবিক রয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। আর অন্যান্য মুদি নিত্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়ত কম বেশি করে ওঠানামা করছে।
এদিকে, আমিষের স্বস্তি কিছুটা ফিরেছে। গতকাল সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। আগের মতোই ৭২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। খাসির মাংসের দাম ৯৮০ টাকা কেজি। মাছের বাজারে বড় সব প্রকার মাছের দাম কমলেও দাম বেশি সব ধরনের ছোট মাছের। কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়তি।
বাজারে আসা এক ক্রেতা জাহিদ হাসান বলেন, বাজারে এখনো বেগুন ও শিমের দাম কমেনি। শীতকালিন সবজি বাজারে ঢুকেছে দাম কিন্তু এখনো কমেনি। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি দেখে ইচ্ছে হয়না কোন জিনিস কিনতে।
আরেক ক্রেতা সালেমান মিয়া বলেন, একটা সবজি কৃষক থেকে তিন হাত বদল হয়ে বাজারে আসে। মাঠে দাম ঠিক থাকে। বাজারে আসলে সবজির দাম পাল্টে যায়।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ বলেন, বাজার স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং অব্যহত আছে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে এবং জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে টাস্কফোর্স ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন