চেয়েছি সংলাপের মাধ্যমে দেখাটা হোক : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১০ বছরে কোনো দিন তাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। তাই সেই দেখাটা হোক, সংলাপের মাধ্যমে এটা আমি চেয়েছি।
মঙ্গলবার রাতে গণভবনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, যাদের আমরা সাজা দিয়ে কার্যকর করেছি, তারা আবারও ক্ষমতায় আসুক বাংলাদেশের মানুষ এটা চায় না, আমরাও চাই না। আমার বিশ্বাস, যারা স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করেন, তারা কেউই চাইবে না।’
তিনি বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। আমরা চাই দেশের যে উন্নয়ন করেছি, তা ধরে রাখতে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক।’
সংলাপের শুরুতে শেখ হাসিনা বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাদের গণভবনে স্বাগত জানান।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে খুনি আর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিই দেশ পরিচালনা করেছে। সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনা, এটাই ছিল আমার সরকারের প্রধান লক্ষ্য। সবচেয়ে বড় কথা ছিল দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি করা।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে দেশের মানুষের উপর অত্যাচার করেছে, ঠিক একই কায়দায় ২০০১ সালে নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট।’
তিনি বলেন, ‘এদেশে একটা খারাপ সংস্কৃতি চালু হয়েছে। যেই ক্ষমতায় আসে, একবার বসলে আর যেতে চান না। খালেদা জিয়া সরকারে এসে আমার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা দিয়েছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে তারাও ৫/৬টি মামলা দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১/১১’র সরকার আমাকে নির্বাচন না করার প্রস্তাব দিয়েছিল। বিনিময়ে একটি উচ্চমর্যাদা দেবে। কিন্তু, আমি তাদের একটি কথাই জোর দিয়ে বলেছি— নির্বাচন হবে এবং জনগণ যাকে চাইবে, সেই ক্ষমতায় আসবে।’
তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা যেখানে বাংলাদেশ রেখে এসেছিলাম, সেখান থেকে বাংলাদেশ আবার পিছিয়ে যায়। এরপর ২০০৮ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি, তখন বিশ্বমন্দা। এর মধ্যদিয়েই আমরা এগিয়ে যাই। ২০১৩ সাল থেকেই নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসংযোগসহ নানা নাশকতা শুরু করে বিএনপি-জামায়াত।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আপনারা যদি বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্রটা দেখেন, তাহলে নিশ্চয়ই এটা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন, আমরা উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার মতো কঠিন কাজটা এই সময়ের মধ্যে আমরা করতে পেরেছি। জনগণের সমর্থন ছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের পাশাপাশি রায়ও কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছি। এ কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে, প্রবৃদ্ধির হার এখন ৭.৮।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আজ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। বিশাল জনগোষ্ঠীর নিয়েও আমরা আমাদের প্রবৃদ্ধির হার অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, আমরা চাই দেশের উন্নয়নটা ও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক। আপনারাও এই ধারা অব্যাহত রাখতে সহযোগিতা করবেন।’
সংলাপে বাম গণতান্ত্রিক জোটের আটটি দলের ১৬ প্রতিনিধি অংশ নেন। আর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত আছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন