ছবি তুলেই ‘প্রতিবন্ধীদের ত্রাণের বস্তা’ কেড়ে নিলো যুবলীগ নেতাকর্মীরা! (ভিডিও)
সাভারে প্রতিবন্ধীদের সামনে ত্রাণের বস্তা দিয়ে ছবি তুলে কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে ঢাকা জেলা যুবলীগ সাভার কলেজ মাঠে দুস্থ ও গরিবদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান শেষে প্রতিবন্ধীদের সামনে ত্রাণ দিয়ে ছবি তুলে সেই ত্রাণ ফের কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে ছিলেন ঢাকা জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাহ উদ্দিন দরনি, সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিএস মিজান।
প্রতিবন্ধী জহুরা বেগম ও জয়নাল জানান, যুবলীগের নেতাদের ত্রাণের কার্ড পেয়ে ব্যাংক কলোনি থেকে ত্রাণ পাওয়ার আসায় সাভার কলেজ মাঠে আসেন। কিন্তু ত্রাণ তো দেবে পরের কথা তাদের মতো ১০-১২ জন প্রতিবন্ধীকে সামনের সারিতে নিয়ে ছবি তুলে ত্রাণের বস্তা আবার ফেরত নিয়েছেন নেতারা।
ছবি তোলার পর দুপুরে ত্রাণ পাওয়ার আসায় ত্রাণের কার্ড হাতে দিয়ে মাঠের একপাশে অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রতিবন্ধী জহুরা বেগম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনিসহ আরও প্রতিবন্ধীরা পেছনে ছিলেন। যখন ত্রাণ দেয়া শুরু হলো তখন প্রতিবন্ধীদের সবার সামনে ডাকলেন নেতারা। ত্রাণের বস্তা হাতে দিয়ে ছবি তুইলা আবার ধাক্কা দিয়ে নিয়ে নিল নেতারা।
জয়নাল নামের আরেক প্রতিবন্ধী বলেন, তাকে ত্রাণের কার্ড দিছে জিএস মিজান। তিনিসহ অনেকে পেছনে বসা ছিলেন। পরে আমাদের ডেকে সামনে বসিয়ে ত্রাণের বস্তা দিয়ে ছবি তুলে আবার কেড়ে নিলেন।
তিনি জানান, তারা ১০ জনের মতো প্রতিবন্ধী ছিলেন। তাদের ত্রাণের বস্তা সামনে দিলে সাংবাদিকরা ছবি তুলেন। ছবি তোলা শেষ হলে আবার ধাক্কাইয়া ধাক্কাইয়া ফেলে দিয়ে ত্রাণের বস্তা নিয়ে নিল।
আরেক নারী প্রতিবন্ধী বলেন, তাকেও মিজান নেতা কার্ড দিছিলো। কিন্তু ত্রাণ দেয় নাই। কয়লাম স্যার দিবেন না ত্রাণ। নেতারা কইলো ত্রাণ শেষ।
ত্রাণ বিতরণের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন- ত্রাণ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এনাম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা-২০ আসনের এমপি বেনজীর আহম্মদ, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আহম্মেদ নাসিম পাভেল ও সাভার পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুল গণি।
এমন অভিযোগের বিষয়ে ত্রাণ বিতরণের আয়োজক ঢাকা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিএস মিজান বলেন, আসলে এগুলো ত্রাণ না উপহার। কার্ডগুলো যাদের দেওয়া হয়েছে সবাইকে উপহার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ৪০টি প্যাকেট বেশি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ কার্ড দিয়ে উপহার নিয়ে আবার কার্ড আরেকজনকে দিয়েছে। তবে মানুষ যে কথা বলছে আমরা এ কাজটি কোনো দিন করি না। এখন যদি ২০০ মানুষ কার্ড নিয়ে আসে আমরা কি করব বলেন। আমি প্রতিবন্ধীদের সামনে নিয়ে নিজে মাল দিয়েছি। যদি কেউ বাকি থাকে তাহলে আবার দেব। সূত্র : দৈনিক যুগান্তর
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন