ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন সেই বিসিএস ক্যাডার
৬ মে সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে এইচএসসি উচ্চতর গণিত পরীক্ষা চলাকালে দুই পরীক্ষার্থী খাতা দেখাদেখি করছিল। এ সময় ওই কক্ষের পরীক্ষা পরিদর্শক প্রভাষক মাকসুদুর রহমান তাদেরকে বাধা দেন। এক পর্যায়ে তাদের খাতা নিয়ে নেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ১২ মে দুপুরে শিক্ষক মাকসুদুর রহমান কলেজ থেকে মোটরসাইকেলে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন যুবক তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এই হামলা বিষয় এবং সরকারের কাছে কী চাওয়া সেই বিষয়ে কথা বলেছেন পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের প্রভাষক মাকসুদুর রহমান। মাকসুদুর রহমানের বক্তব্য হুবহু দেয়া হলো-
ঘটনাটি ঘটেছে সামান্য একটি কারণে। গত ৬ তারিখে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হচ্ছিল। উচ্চতর গণিত পরীক্ষার দিনে নকলে বাধা দেয়ায় জেরে ঘটনাটি ঘটে। আমাদের ১২ তারিখে আরেকটি পরীক্ষা ছিল। আমি ওই পরীক্ষা শেষ করে যখন বের হয়ে আসছি, তখনই আমাকে অতর্কিত আক্রমণ করা হয়। অতি তুচ্ছ কারণে আমাকে আক্রমণ করা হয়। দুইজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা হলে দেখাদেখি করছিল। অনৈকিত সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেছে।
মাকসুদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের খাতা নেওয়ার কারণে সরকারি বুলবুল কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতির কাছে অভিযোগ করে আমার নামে। দুটো মেয়ে সেই অভিযোগ করেছে। ওই দুটো মেয়ে তার নিজস্ব ক্যান্ডিডেট ছিল, এ কারণে সভাপতির গায়ে লেগেছে বিষয়টা। আমি আমার কাজ শেষে ক্যাম্পাস থেকে মোটরসাইকেল বের করি। হঠাৎ পেছন থেকে একটা শব্দ আসে ‘শালাকে’ ধর। আমি এটা শুনে স্বাভাবিকভাবে মোটরসাইকেল ব্রেক করি।
আমি ব্রেক করতে করতেই কয়েকজন আমাকে এসে আক্রমণ করে। কিল, ঘুষি ও লাথি দেওয়া শুরু করে। এটা দেখে আমি অবাক হয়ে গেছি। এরপর আমাদের সিনিয়র স্যারেরা বলেন, তুমি চলে যাও। আমি তখন কলেজ থেকে চলে এসেছি। অলরেডি দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আমি কৃতজ্ঞ প্রশাসনের কাছে। আর আমাদের শিক্ষা ক্যাডার এসোসিয়েশন আছে, ৩৬ ব্যাচের একটা অ্যাসোসিয়েশন আছে। আমি এই অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মামলা করব। যে প্রকৃত আসামি এবং যে এই হামলার নির্দেশদাতা তাকে এখনও আইনের আওতায় আনা হোক। এখন তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় নাই।
যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং আসামিকে ধরার জন্য ফোন করে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এখনও তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় নাই; বরং আরও যে কয়েকজন সঙ্গে ছিল ওদেরকেও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় নাই। যারা এই আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত আছে তাদের সবার নামে আমরা একটা মামলা করব। আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং আক্রমণ করা হয়েছে। প্রত্যেকেই যেনো বিচারের আওতায় আসে।
যেহেতু আমি একটা সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এটা হয়েছে এ জন্য সরকারের দায়বন্ধতা এককভাবে আছে বলে আমি মনে করি। প্রশাসন যদি ইচ্ছে করে তাহলে অবশ্যই এদের আইনের আওতায় আনবে বলে আমি মনে করি। -খবর যুগান্তর অনলাইনের
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন