ছাত্রীদের গ্রেপ্তার-রিমান্ড নজিরবিহীন : রিজভী
কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার হিড়িক চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বলেছেন, বিশেষ করে ছাত্রীদের গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়া নজিরবিহীন। এতে অভিভাবকদের মাঝেও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার দুপুরে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন রিজভী।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘শিশু-কিশোররা রাস্তায় নেমেছিল নিরাপদ সড়কের দাবিতে। তাদের অনেক স্লোগান মানুষের হৃদয়কে শুধু দোলাই দেয়নি বরং ঘুমন্ত বিবেককে জাগিয়েছে, কর্তব্যবোধ সম্বন্ধে সচেতন করেছে।’
‘আর এ আন্দোলনের সমর্থনকারীদের বলা হচ্ছে উসকানিদাতা। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, ফেসবুক ব্যবহারকারী, রাজনৈতিক দল- যারা এই আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের হিড়িক চলছে। রিমান্ডে নিয়ে শেখানো বুলি স্বীকার করতে উৎপীড়ন করা হচ্ছে।
‘বিশেষ করে ছাত্রীদের গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়া তো নজিরবিহীন। সবচেয়ে লোমহর্ষক ঘটনা হচ্ছে ছাত্রীদের সন্ধ্যারাত ও গভীররাতে হলের সামনে থেকে, বাসা থেকে এবং নদীর চরের প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
ধমক দিয়ে প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করা যাবে না উল্লেখ করে সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মানুষের বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে হরণ করে যে শূন্যতার সৃষ্টি করেছেন, তাতে ধেয়ে আসা প্রতিবাদী মানুষের টর্নেডোতে ভয় পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বেসামাল হয়ে পড়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ভয়ে বেসামাল হয়ে কখনো ভয়ের কথা বলছেন, কখনো ধমকের সুরে কথা বলছেন। চারদিকে সরকারের পতনের শব্দ শোনা যাচ্ছে।’
রিজভী বলেন, আন্দোলন দমাতে সরকারের কার্যক্রম দেখে দেশ-বিদেশের মানুষ ভয়ে শিহরিত হয়ে উঠেছে। এ আন্দোলনে সমর্থনকারী আলোকচিত্রী, অভিনেত্রী, শিল্পী, কলাকুশলি, লেখক, সাংবাদিক, অভিভাবক কেউ সরকারের নিপীড়ন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।
গুজব ক্ষতিকর এবং তার দল গুজবকে প্রশ্রয় দেয় না জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমরা ক্ষতিকর গুজবের পক্ষে নই। তবে প্রকাশ্যে হাতুড়ি দিয়ে ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার পা গুড়া করে পঙ্গু করে দেওয়া এবং শহীদ মিনারে একজন ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করা কি গুজব ছিল? একযোগে পুলিশ ও হেলমেটধারী সন্ত্রাসীদের শিশু-কিশোর ও সাংবাদিকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া কি গুজব ছিল? এগুলো সবার সামনেই ঘটেছে। এদের কেন বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না?
‘বেগম জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ভট’
কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে উদ্ভট দাবি করে রিজভী বলেন, বেগম জিয়াকে বন্দী করার জন্যই শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে অসত্য মামলায় সাজা দিয়েছেন। সরকার নানা ফন্দী-ফিকিরের জাল বুনে সত্তোরোর্ধ একজন জননন্দিত নেত্রীকে বন্দি করে এখন নানাভাবে তার ওপর জুলুম চালাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন লাগামহীন উদ্ভট বক্তব্য দিয় যাচ্ছেন। এসব বক্তব্য শুনে দেশের মানুষেরা তামাশা মনে করলেও ক্ষমতাসীনরা তাতে লজ্জা পায় না। কারণ তারা জনসমর্থনের পরোয়া করে না। মিথ্যা বলার জন্য তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই।’
রিজভীর মতে, সরকার প্রধান বাংলাদেশকে নিজের পৈতৃক তালুক মনে করে বলেই বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরাদের তার আক্রোশের শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় কারাগারে জুলুম সইতে হচ্ছে।
রিজভী অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ও সাজা প্রত্যাহার করে ঈদের আগেই খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন