ছিনতাই চেষ্টা বহির্বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বিমানকে, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের


উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার মতো কোন ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে সেজন্য বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা জরুরি। তা না হলে সিভিল এভিয়েশনের ক্যাটাগরি ওয়ান হওয়ার যে প্রচেষ্টা তা বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া, বাংলাদেশ থেকে উন্নত দেশে বিমান চলাচল কঠিন শর্তের মুখে পড়ার আশঙ্কাও তাদের। আর এজন্য সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি নিরাপত্তায় নিযুক্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে পদক্ষেপ নেয়ার ওপর জোর দিয়েছেন তারা।
নিরাপত্তা ঘাটতির কারণ দেখিয়ে ২০১৬’র মার্চে আকাশপথে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাজ্য। দেশটির দেয়া নানা শর্ত পূরণের পর ২০১৮র ফেব্রুয়ারি মাসে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
বিমান পরিবহনে ভাবমূর্তি সংকট কাটিয়ে যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ। ঠিক সে সময়, গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি ঘটে বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার ঘটনা। এতে আবারও প্রশ্নের মুখে- শাহজালালসহ দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোতে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী উঠলেও তাদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা তল্লাশি কিছুটা শিথিল। আবার এই তল্লাশি এড়িয়ে যান ভিআইপি ও উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা। তাই প্রযুক্তির দুর্বলতা, না কি নিরাপত্তায় দায়িত্বরতদের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখার আহ্বান খাত সংশ্লিষ্টদের।
গ্যালাক্সি ফ্লাইং একাডেমির সিইও, উইং কমান্ডার, এটি এম নজরুল ইসলাম বলেন, ম্যান বিহাইন্ড দ্যা মেশিন সবসময় একটি বড় ব্যাপার। তারা কাজটা ঠিকমতো করছেন কিনা সেটা দেখার বিষয়। যারা উপরের লেভেলের কর্মকর্তা তারা হয়তো জানেনই না ফিল্ড লেভেলে কোনো কর্মকর্তা সমঝোতায় চলে গেছেন। তদন্ত করে আসলে কি ছিলো বের করতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ থেকে আকাশযানে চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে আস্থাহীনতা তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশ বিমানের সাবেক পরিচালক নাফিস ইমতিয়াজ বলেন, যতগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে তারা সবাই এখন এখানটায় নজর দেবে। বলবে যে, এখান থেকে যে সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স হয়, সেই ক্লিয়ারেন্সে বিদেশের অমুক জায়গায় নামতে পারবে না। ক্যাটাগরি ওয়ান হতে গেলে আরো কঠিন শর্ত আরোপ করতে পারে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন সচিব মহিবুল হক বলছেন, সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে তদন্তে। এমনকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে না বলেও দাবি তার। তিনি বলেন, যারা স্ক্যানিং মেশিনগুলো মনিটর করার দায়িত্বে ছিলো তাদের কোনো অবহেলা আছে কিনা, এটা আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। যে বিস্ফোরকের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো সত্যিকার বন্দুকও নয়, বিস্ফোরকও নয়। সেদিক থেকে বাইরে এটা নিয়ে বড় প্রতিক্রিয়া হওয়ার সুযোগ নাই।
এ ঘটনার পর বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো কড়াকড়ি করা হয়েছে বলে জানান সচিব।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন