ছেলের লাশ টয়লেটের ট্যাংকিতে পুঁতে ভোট প্রার্থনায় পিতা-মাতা!
নিজের সন্তান গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করার পর ঝামেলা এড়াতে ৪ দিন লাশ টয়লেটের ট্যাংকিতে ফেলে দিয়ে নির্দ্বিধায় এলাকার জনগণের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনায় বেড়িয়েছে পিতা-মাতা।
ঘটনার ৪ দিন পর শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) হঠাৎ বিষয়টি জানাজানি হলে সকাল থেকে হাজার হাজার উৎসুক জনতার ভীড় জমে মৃতের বাড়িতে।
চাঞ্চল্যকর এবং নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা গ্রামে।
দিনমজুর আলহাজ্বের ছেলে ১৮ বছর বয়সী যুবক করীম ৪ দিন আগে গত মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) রাতে কোন এক সময় নিজের শয়নকক্ষে আত্মহত্যা করে। বিষয়টি টের পেয়ে করিমের মা নাজমা খাতুন তাৎক্ষণিক স্বামীকে জানায়। পরে ঝামেলা এড়াতে তারা ছেলের লাশ টয়লেটের ট্যাংকিতে ফেলে দিয়ে বালিচাপা দিয়ে সকাল থেকে ইউপি নির্বাচনের ভোট প্রার্থনায় বের হয় স্বামী স্ত্রী।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানায় মৃতের বাবা-মা।
তারা আরো বলেন, দুই বছর আগে ছেলের বৌ চিরকুটে ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ লিখে আত্মহত্যা করে। তখন সেই ঝামেলা শেষ করতে বিভিন্ন খাতে ম্যানেজের নামে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়। সেই টাকাও পরিশোধ করতে হয় বাড়ি বিক্রি করে। এখন ছেলে আত্মহত্যা করার পর লোক জানাজানি হলে যদি আবারও মোটা অর্থ জরিমানা দিতে হয় সেই শংকায় ছেলের লাশ টয়লেটের ট্যাংকিতে চাপা দেয়। সেই সাথে আসন্ন নরিনা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থী হিসেবে এলাকার ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন মৃতের মা নাজমা খাতুন ওরফে করুনা।
এদিকে, ঘটনা জানাজানির পর শাহজাদপুর থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে শুক্রবার বিকেলে নিহতের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেন। সেই সাথে মৃতের পিতা আলহাজ্ব, মাতা নাজমা খাতুনসহ ৪ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে নরিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুন্ত্রী জানান, ‘৪ দিন ধরে ছেলের লাশ গুম করে রেখে নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা করছে সত্যি এটা আশ্চর্যজনক। আমরা একবারের জন্যও অনুমান করতে পারিনি তারা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে।’
শাহজাদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন এন্ড কমিনিউটিং পুলিশিং) আব্দুল মজিদ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন