জনগণের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত বিএনপি এখন বিদেশি এজেন্ট নিয়োগ করেছে- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, ‘বিএনপির নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। পিছু হটে তারা এখন মুখে নির্বাচন বর্জনের কথা বলছে আর ডেভিড বার্গম্যানসহ কিছু ইহুদি এজেন্ট নিয়োগ করেছে।’
আজ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির নির্বাচনবিরোধী প্রচারণা এবং নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা কার্যত জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই প্রেক্ষিতেই তারা এতোদিন নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলে এসেছিলো কিন্তু এখন সেখান থেকে সরে এসে নির্বাচন পরিহার বা বর্জন করার কথা বলছে। অর্থাৎ জনগণ যেভাবে নির্বাচনে সাড়া দিয়েছে সে জন্য বিএনপি পিছু হটেছে। সেই সাথে তারা এখন লবিস্ট নিয়োগ করে বিদেশে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিবন্ধ লেখাচ্ছে, ডেভিড বার্গম্যানসহ কিছু ইহুদি এজেন্ট তারা নিয়োগ করেছে এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেশবিরোধী রিপোর্ট করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।’
তবে এতে কোনো লাভ হয়নি উল্লেখ করে হাছান মাহ্মুদ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া নিজের নামে নিবন্ধ লেখেছিলেন দেশের বিরুদ্ধে। এটি নতুন কোনো কিছু নয়। বিএনপি সবই পারে। কংগ্রেসম্যানদের সই জাল করে নিবন্ধ দিয়েছিলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা দেশে নিয়ে এসেছিলো যিনি এখন জেলখানায় আছেন। আবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সাথে কথা হয়েছে, অমিত শাহ ফোন করেছেন বলে ভুয়া প্রচারও করেছিলো বিএনপি। এভাবে শুধু জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যান একটি দলই নয়, বিএনপি একটি জালিয়াত দলে রূপান্তরিত হয়েছে।’
এ সময় ব্রাসেলসভিত্তিক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপে’র সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে দেওয়া মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রাসেলসে বসে রিপোর্ট লেখা খুব সহজ এবং তারা রিপোর্টটা নিশ্চয়ই আরো ২০-২৫ দিন বা ১ মাস আগে লিখেছিলো। তারা যদি দেশে এসে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে যেতো, গত ২০ দিনে দেশ যে ব্যাপকভাবে নির্বাচনমুখী, কি পরিমাণ উৎসাহ উদ্দীপনা -এটি যদি দেখতে পেতো, তাহলে রিপোর্টটা সংশোধন করে নিতো। আশা করি তারা রিপোর্টটা পরে সংশোধন করে নেবে।’
বামজোট নির্বাচন বর্জনের কর্মসূচি দেবে এমন বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাম ভাইদের আমি খুব সম্মান করি। কারণ বাম ভাইয়েরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, প্রগতিশীল শক্তি। আমার মধ্যেও কিছু বাম চিন্তা-ভাবনা আছে। সমাজতন্ত্র আমাদের দলেরও অন্যতম মূল স্তম্ভ। এ জন্য বাম ভাইদের অনেক বিষয়কে আমি সমর্থনও করি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বাম ভাইদের কোনো ভোট নাই। উনারা ভোটে কোনো মানুষের সমর্থন পায় না। ঢাকা শহরে তো কেউ কেউ মেয়র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলো, প্রায় ৩৭ লক্ষ ভোটারের এই ঢাকা শহরে তাদের পক্ষে ভোটের সংখ্যা হাজার বা দু’হাজারের অংক পার হয়নি। উনাদের ভোট নাই বলে উনারা ভোট বর্জন করুক আর না করুক এতে নির্বাচনে কোনো প্রভাব নাই।’
দেশে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবং এই নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে বর্ণনা করে হাছান বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সার্কভুক্ত দেশগুলো, ওআইসি আরো অন্যান্য দেশ ও জোট দেশে নির্বাচনি পর্যবেক্ষক ইতিমধ্যেই পাঠিয়েছে এবং ২০০৮ সালে ও অন্যান্য সময় যেভাবে নির্বাচনি পর্যবেক্ষকরা এসেছিলো, একইভাবেই পর্যবেক্ষকরা বিদেশ থেকে এসেছে, দেশি পর্যবেক্ষকরাও ব্যাপকভাবে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি প্রার্থনা করেছে, অনেকেই অনুমতি পেয়েছেন। এই নির্বাচনকে নিয়ে সমগ্র পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের যে আগ্রহ, এতেই প্রমাণিত হয় এ নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক মহল ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে।’
‘সুতরাং বিএনপির এই নির্বাচনবিরোধী প্রচারণা এবং তাদের নেতাদের এই বক্তব্য আসলে অন্তঃসারশূন্য এবং জনগণের কাছে এগুলোর কোনো আবেদন নাই’ বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কোন দল অংশগ্রহণ করলো সেটি মুখ্য বিষয় নয়, জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করছে কি না সেটিই মুখ্য বিষয়। ১৯৭০ সালেও নির্বাচনেও অনেক নামকরা দল, অনেক নামকরা নেতা অংশগ্রহণ করে নাই কিন্তু জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছিলো এবং সেটি আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছিলো। তাই এখনও কোনো বিশেষ দল অংশগ্রহণ করা না করা ওপর নির্বাচন নির্ভর করে না। জনগণ ব্যাপকভাবে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন