জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গড়লে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলাদেশকে আদর্শ ভাববে: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলাদেশকে একটি আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করবে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) জাতীয় সংসদের এলডি হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা একসময় লড়াই করেছি, এখন সেই অভিজ্ঞতা থেকে ঐক্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের পরিবর্তনের নতুন ধারা গড়ে তোলা সম্ভব। ৫৩ বছর ধরে জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং গত ১৬ বছর ধরে চলা লড়াই-সংগ্রামের লক্ষ্যই ছিল একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা। সেই সংগ্রামে বহু মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে লাখ লাখ মানুষের রাস্তায় নামা এবং আত্মত্যাগ ছিল একটি স্পষ্ট বার্তা—এমন একটি রাষ্ট্র গড়তে হবে, যেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আর কখনো পথে নেমে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য জীবন দিতে না হয়।’
আলী রীয়াজ জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদেরও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলেই এই প্রয়াস সফল হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রতিটি রাজনৈতিক শক্তির অভিন্ন লক্ষ্য একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে, গুম-খুনের আতঙ্ক থাকবে না, বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকবে এবং প্রধানমন্ত্রীসহ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে থাকবেন না।’
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন দলটির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। সংলাপে অংশ নেন দলটির ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
বক্তব্যে শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে আমরা যখন সংস্কারের কথা বলতাম, তখন অনেকে বিষয়টি নিয়ে উপহাস করত। কিন্তু আজ সেই সংস্কারই জাতীয় গুরুত্ব পেয়েছে। এটা প্রমাণ করে, আমাদের ধারণা ভুল ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গঠন করতে চাই, যার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি মজবুত করা যাবে এবং ভবিষ্যতে যেন কোনো ফ্যাসিবাদী কিংবা স্বৈরশাসক আবির্ভূত না হতে পারে, সেজন্য আমরা এই আলোচনায় অংশ নিচ্ছি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত ১৬৬ দফার মধ্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদ ১২৯টিতে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে, ১২টিতে দ্বিমত জানিয়েছে, ১৯টিতে আংশিক সমর্থন দিয়েছে এবং ৬টি বিষয়ে কোনো মতামত দেয়নি বলে জানা গেছে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন