জমে উঠেছে সাতক্ষীরা বাণিজ্য মেলা

সাতক্ষীরা বাণিজ্য মেলা জমে উঠেছে। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রথমদিনে দর্শনার্থীদের পদচারণা ছিল চোখে পড়ার মত। দুপুরের পর থেকে বাড়তে থাকে ক্রেতা সমাগম। স্টলগুলোতে নারীওবাচ্চাদের ভিড় বেশি ছিল।
বাণিজ্যমেলায় ঘুরে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই এসেছেন মেলায় পছন্দের জিনিস কিনতে। মেলায় প্লাস্টিক পণ্য, অ্যালুমিনিয়ামের গৃহস্থালি (ক্রোকারিজ), ইমিটেশনের গয়না, কসমেটিকসের স্টলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। এছাড়া প্রথম দিন থেকেই ভাল বিক্রি হচ্ছে। আবার কাঠ ও প্লাইউডের আসবাব ও ইলেকট্রনিক পণ্যের স্টলগুলোও ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্র। মূল্যছাড়সহ বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ায় ক্রেতারা আকৃষ্ট হচ্ছেন।
মেলা থেকে গৃহস্থালি পণ্য কিনছিলেন মুন্নি খাতুন বলেন- প্রথম দিনই মেলায় এসেছি। কারণ প্রথম দিকে ভিড় কম থাকে। বাণিজ্য মেলায় কম মূল্যে ও ভাল মানের গৃহস্থালি পণ্য পাওয়া যায়।

গৃহস্থালি পণ্য বিক্রেতা আতিয়ার রহমান জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে দুপুরে দোকান চালু করেছি। প্রতিবারই একটি স্টল দেয়ার চেষ্টা করি। কারণ মেলায় বিক্রি ভাল হয়। ওই বিক্রেতা বলেন, প্রথমদিনে বিক্রি তেমন না বাড়লেও ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। তবে দিন বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বিক্রি বাড়বে বলেও জানান ওই বিক্রেতা।

বাণিজ্য মেলায় এবারে সবচেয়ে বেশি আর্কষণ হচ্ছে ইমিটেশনের গয়না, কসমেটিকস, শাড়ি, থ্রি-পিস ও জুতার স্টলগুলো। এই স্টলগুলোতে নারী ও বাচ্চাদের ক্রেতাদের সংখ্যা বেশি। মেলায় এসেছে বাহারি রঙের বিভিন্ন দেশীয় শাড়ি, থ্রি-পীস, কসমেটিকস এ ইমিটেশনের গয়না।

মেলায় ইমিটেশনের গয়না কিনছিলেন গীতা রানী। তিনি বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন দেশের কসমেটিকস, ইমিটেশনের গয়না পাওয়া যায়। তা ব্যতিক্রম, দৃষ্টিনন্দন ও মানের দিক দিয়ে সেরা।
তিনি বলেন, ইমিটেশনের গয়নাগুলো শাড়ি বা থ্রি-পীসের সাথে মানসই করে পড়লে অনেক বেশি ব্যক্তিত্ববান মনে হয়। মেলায় বাবা-মায়ের হাত ধরে এসেছেন অনেক শিশু। মেলায় শিশুদের জন্য থাকছে নজরকাড়া ডিজাইনেরা পোশাক, জুতা ও খেলাধুলার সুযোগ ।

৫ বছরের মেয়ে তাহার জন্য খেলনা কিনছিলেন মা আমেনা বেগম। তিনি বলেন, শিশুদের সাতক্ষীরা লেকভিউ ছাড়া বিনোদনের তেমন কোনো জায়গা নেই। তাই প্রতিবছরই বাণিজ্য মেলায় বাচ্চাদের ঘুরতে নিয়ে আসি। এছাড়া এখানে শিশু পার্কের ব্যবস্থা রয়েছে। এই মেলা শিশুদের জন্য বিনোদন বটে।

মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সুমন জানান, দুপুরের পর থেকে মেলায় ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। আশাকরি বাণিজ্যমেলা ব্যবসা সফল হবে। আমাদের আন্তরিকতার সবটুকু দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে মেলা পরিচালনা করছি।

সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু বলেন, আমরা দীর্ঘদিন পরে এমন একটা মেলার আয়োজন করতে পেরে খুবই আনন্দিত। বিশেষ করে শিল্প উদ্যোক্তারা লাভবান হবেন, তাদের পণ্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মেলায় জীবনধারণের জন্য মোটামুটি যেসব পণ্য প্রয়োজন, যেমন খাবার, পোশাক, গয়না, হোম ডেকোর বা ঘর সাজানোর সামগ্রী সবই থাকছে। আছে ঘরে তৈরি খাবারের সব আয়োজনও। সব শ্রেণির মানুষকে লক্ষ্য রেখেই মেলাটির আয়োজন করা হয়েছে।
মেলায় এবার স্টল ৭২টি। মেলা চলবে মাসব্যাপী, কোনো সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়াই মেলা সকাল ১০ থেকে রাত ১০ পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। প্রবেশ ফি ধরা হয়েছে জনপ্রতি ২০ টাকা।