জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ৫০ বছর ধরে বেদখলে থাকা সরকারি রাস্তা এসিল্যান্ডের হস্তক্ষেপে দখলমুক্ত

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের নন্দইল ও ধরন্জী মৌজার ফসলি মাঠে স্হানীয় কৃষক কর্তৃক বেদখলে থাকা সরকারি রেকর্ডভুক্ত রাস্তাটি দখল মুক্ত করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ বেলায়েত হোসেন।
(৩ জুলাই) বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় তিনি সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় জন সাধারণের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের উপস্থিতিতে দখল মুক্ত করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা, সার্ভেয়ার সুরাইয়া জান্নাত, নাজির মেহেদী হাসান, স্হানীয় কৃষকবৃন্দ।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, হিলি বাজারে যাতায়াতের জন্য বৃটিশ আমলে এই রাস্তাটি রেকর্ডভূক্ত করা হয় এবং রাস্তাটি দিয়ে তৎকালীন সময়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধলাহার, কড়িয়া, দড়িপাড়া, পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের উৎপাদিত ও ব্যনসায়িক পণ্য নিয়ে চলাচল করত।
সময়ের পরিক্রমায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে এক সময় রাস্তাটির গুরুত্বও কমে যায়। এঅবস্থায় রাস্তার দুই পাশের জমি মালিকরা রাস্তাটি নিজেদের দখলে নিতে থাকে। এভাবে একটা সময় শুধুমাত্র কাগজে আর নকশায় রাস্তাটির অস্তিত্ব থাকলেও বাস্তবে আর রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায় না।
কিন্তুু প্রায় ৫০ বছর পর কৃষিকাজে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়া ও মাঠ থেকে উৎপাদিত ফসল তোলার জন্য কৃষকরা রাস্তাটির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে থাকে। সেই অনুযায়ী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিকট বার বার ধর্না দিলেও তারা ভোটের স্বার্থে এটি বের করতে তেমন গুরুত্ব দেয় না।
পরবর্তী বিষয়টি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ বেলায়েত হোসেন কে অভিহিত করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমনা রিয়াজের নির্দেশনায় তিনি ৩ জুলাই রাস্তাটি দখল মুক্ত করে পনুরায় চলাচলের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করেন।
ধরঞ্জী গ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, সিএস রের্কডভুক্ত হওয়ার পর থেকে রাস্তাটি দিয়ে অত্র এলাকার জনসাধারণ তৎকালীন ভারতের বালুরঘাট বাজারে পণ্য নিয়ে যাতায়াত করত। পরবর্তী ক্রমেই রাস্তাটির দুই পাশের কৃষকরা কেটে নেওয়ার কারণে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
দীর্ঘদিন পর হলেও আবার রাস্তাটি জনসাধারণের সুবিধার্থে বের করার প্রক্রিয়ার শুরু হওয়াই আমরা খুশি নন্দইল গ্রামের আদিবাসী কৃষক রবি মুরমু বলেন, রাস্তাটি না থাকার কারণে আমরা জমির ফসল শ্রমিক দ্বারা বাড়ী পর্যন্ত নিতে খরচ বেশি হতো। রাস্তাটি হলে স্বল্প করচেই ঘরে তুলতে পারবো।
স্থানীয় বিজিবি সদস্য আব্দুস সাত্তার দীর্ঘ অর্ধশত বছর পর কৃষকদের সুবিধায় রাস্তা দখলমুক্ত করায় ইউএনও ও সহকারী কমিশনার ভূমি কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাস্তাটি সরকারী বরাদ্ধ প্রদানের মাধ্যমে অতি দ্রুত চলাচল উপযোগী করার জন্য অনুরোধ জানান।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বেলায়েত হোসেন বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে রাস্তাটি বেদখলে থাকার বিষয়টি জানতে পারি।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমনা রিয়াজ এর নির্দেশনায় ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও স্থানীয় জনগনের সহযোগিতায় রাস্তাটি দখলমুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করি।
রাস্তাটি পুনঃরুদ্ধার করতে পারলে আবার কৃষকদের কাজে লাগবে। একারণে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন