জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে বিজলী টুয়েন্টি টুয়েন্টি জাতের মরিচ চাষে কৃষকের সাফল্য

খেলার জগতে জনপ্রিয় টুয়েন্টি টুয়েন্টি ক্রিকেট খেলার মত স্বল্প সময়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির প্রত্যন্ত এলাকায় বিজলি টুয়েন্টি টুয়েন্টি জাতের মরিচ চাষ করে সাড়া ফেলেছে মোস্তফা নামের এক উৎসাহী কৃষক। অন্যের জমিতে এ জাতের মরিচ চাষ দেখে আগ্রহী হয়ে নিজের ৫৭ শতক জমিতে চাষ করে প্রথম বছরেই বাজিমাৎ করেন তিনি।

শুরুতেই এতে তার আয় হয় প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকা। আশাতীত লাভ এবং এমন সাফল্যে আবারও নতুন করে ৫০ শতক জমিতে মরিচ চাষ শুরু করেছেন কৃষক মোস্তাফা কামাল।

মোস্তফা কামাল উপজেলার আওলাই ইউনিয়নের নওগাঁ কাঠালী গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালচে সবুজ পাতায় ছাওয়া গুল্ম জাতীয় গাছে ভরা মরিচ ক্ষেতে ৪/৫ জন মহিলা ক্ষেতের পরিচর্যা ও মরিচ উত্তোলন করছে। কৃষক মোস্তাফা নিজেও তাদের পাশাপাশি ক্ষেতে কাজ করছেন।

তিনি জানান, গত বছর পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধার জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ডালিম গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের লাগানো মরিচ দেখে নিজে ঐ মরিচ চাষে আগ্রহী হয়ে পড়েন।

সেই অনুযায়ী ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে প্রথমে ৫৭ শতক জমিতে মরিচ চাষ শুরু করেন। জমি প্রস্তুত, চারা ক্রয়, শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা খরচ করেন। চারা সংগ্রহ করেন উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের মুন্না নার্সারী থেকে। প্রথম ধাপে তিনি ৫৭ শতক জমিতে ৯ হাজার চারা রোপন করেন।

কৃষকের তথ্য মতে, অন্যান্য জাতের মরিচের ফলন পেতে আড়াই থেকে তিন মাসে লাগলেও বিজলী টুয়েন্টি টুয়েন্টি জাতের মরিচের ফলন পাওয়া যায় রোপনের ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে। প্রথমে চালানে তিনি জমি থেকে ৪০ মন মরিচ উত্তোলন করেন। বিক্রি করেন প্রায় ৪০ হাজার টাকা।

এরপর দু’দিন পর পর মরিচ উত্তোলন করে এ পর্যন্ত প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মরিচ বিক্রি করেছেন তিনি। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে চলতি মৌসুমে আরও দেড় থেকে দুইলক্ষ টাকা বিক্রির আশা করছেন।

কৃষক মোস্তফা কামাল বলেন, ” আমার এই মরিচ ক্ষেত থেকে ১৫ লক্ষ টাকা বিক্রির লক্ষ্য ছিলো। কিন্তুু আবহাওয়া কারনে কিছু মরিচ গাছ নষ্ট হওয়া এবং বাজারে মুল্য কম হওয়াই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। তারপরও মোটামুটি ভাল লাভ হয়েছে। এ কারনে নতুন করে আরো ৫০ শতক জমিতে এ জাতের মরিচ চাষ করেছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জসিম উদ্দিন বলেন, মরিচ একটি লাভজনক মসলা জাতীয় ফসল। এ বছর আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলেও বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষক মরিচ আবাদে আগ্রহী হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাঁচবিবি থেকে মরিচের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদেরকে কারিগরি পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।