জাকির নায়েককে হস্তান্তর সম্ভব নয় : মাহাথির
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ধর্মপ্রচারক ড. জাকির নায়েককে ভারতের কাছে হস্তান্তরের অধিকার তার দেশ তাকে দেয়নি।
তিনি বলেন, ‘জাকির নায়েক মনে করেন, ভারতে ফিরে আইনি লড়াই করলেও তিনি ন্যায়বিচার পাবেন না।’
ভারতের দৃষ্টিতে ‘বিতর্কিত’ ধর্মপ্রচারক ড. জাকির নায়েক। বক্তৃতার মাধ্যমে তিনি ধর্মীয় উগ্রবাদকে উস্কে দিচ্ছেন।
গত ৬ জুন জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ এনে তাকে পেতে ইন্টারপোলে আবেদন করার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
ইডি অর্থ পাচারের অভিযোগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আরেকটি মামলায় নতুন করে জাকির নায়েককে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ওই মামলায় ১৯৩ কোটি ৬ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল। কিন্তু, প্রথম তালিকায় জাকির নায়েকের নাম ছিল না।
ইতোমধ্যে ভারতে ড. জাকির নায়েকের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে গ্রেফতার এড়াতে ২০১৬ সালে ভারত ছাড়েন ড. জাকির নায়েক।
৫৩ বছর বয়সী এই ধর্মীয় বক্তা বর্তমানে মালয়েশিয়াতে অবস্থান করছেন। দেশটি তাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমোদন বা নাগরিকত্ব দিয়েছে।
মালয়েশিয়া ইন্টারপোলের সদস্য রাষ্ট্র নয়। ফলে এই সংস্থার মাধ্যমে জাকির নায়েককে ভারত ফেরত চাইলেও মালয়েশিয়ার আইন তা অনুমোদন করে না। মূলত দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ সেটিই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
অবশ্য ২০১০ সালে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি হয়েছে। সেই ভরসাতেই জাকির নায়েককে ভারতে ফেরানোর পরিকল্পনা করছে ইডি।
ড. জাকির নায়েককে কেন ফেরত দেয়া সম্ভব নয়, তা জানাতে গিয়ে মাহাথির মোহাম্মদ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে তার দেশের একটি তুলনাও তুলে ধরেছেন।
সোমবার তিনি মালয়েশিয়ার দ্য স্টার অনলাইনকে জানান, ২০১৫ সালে মঙ্গোলিয়ান মডেলকে খুনের দায়ে মালয়েশিয়ার সাবেক পুলিশ কমান্ডো সিরুল আজহার ওমরের ফাঁসির আদেশ হয়। কিন্তু, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী সিরুলকে দেশটি মালয়েশিয়ার কাছে হস্তান্তর করেনি।
মাহাথির বলেন, ‘আমরা সিরুলকে ফেরত দিতে অস্ট্রেলিয়াকে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু, তারা ভয় পেয়েছিল, আমরা তাকে ফাঁসি দেব। এজন্য আর ফেরত দেয়নি।’
২০১৬ সালের ওই মামলার সূত্র ধরেই সম্প্রতি ইডি জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। সংস্থাটি বলছে, গত মাসে জাকির নায়েক নিজে এবং তার ট্রাস্টের মাধ্যমে অজ্ঞাত ব্যাংক একাউন্ট থেকে কোটি টাকার বেশি গ্রহণ করেছেন।
দ্য ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন (আইআরএফ) ছাড়াও মুম্বাইভিত্তিক দাতব্য সংস্থা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করেন ড. জাকির নায়েক।
ইডি বলছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে তিনি দেশি-বিদেশিদের থেকে অর্থ অনুদান পেয়েছেন, যার মধ্যে যাকাতের টাকাও রয়েছে। বাইরের দেশের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত, ওমান ও মালয়েশিয়া থেকে যাকাতের টাকা জাকির নায়েকের একাউন্টে দেয়া হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন