জাতীয় পার্টিকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রওশনের আকুতি
জাতীয় পার্টির (জাপা) সম্মান বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘তারা (জাপার এমপিরা) বিরোধী দল হিসেবে পরিচয় দিতে পারেন না। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা পান। কারণ, আমরা সরকারি দল, না বিরোধী দল–সাংবাদিকরা তা জানতে চান।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে জাতীয় পার্টির প্রকৃত অবস্থান কোনটি তা জানতে চান রওশন এরশাদ। জাপার তিন সংসদ সদস্যকে মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ না দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অভিযোগও করেন দলটির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৪ সালে বিএনপির বর্জনের মধ্যে নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। এরপর বিরোধী দলের আসনে বসার পাশাপাশি সরকারেও যোগ দেয় দলটি। দলের তিনজন রয়েছেন সরকারের মন্ত্রিসভায়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ রয়েছেন মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্বে।
সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রওশন এরশাদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, আমাদের মন্ত্রীদের উইথড্রো করে নেন। আপনি সেটা করেননি। আমরা বিরোধী দল হতে পারিনি। এভাবে বিরোধী দল হওয়া যায়?’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি যদি বলতে পারতেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়ুন। আমরা বলতে পারি না। এটা আপনি করলে জাতীয় পার্টি বেঁচে যেতো। সম্মানের সঙ্গে থাকতে পারতো। আমরা সম্মানের সঙ্গে নেই। এক বছর আছে আরও; সেটা দেখেন।’
এসময় সরকারি দলের দিক থেকে মাইক ছাড়াই বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বলেছেন। জবাবে রওশন এরশাদ বলেন, ‘আপনি নির্দেশ দিলে মানবে না কে? না, দেননি। না, না। সবাইকে নিয়ে নেন। সবাইকে মন্ত্রী বানিয়ে দেন।’
বিরোধী দলীয় নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের সংসদের চার বছর পূর্তি হয়েছে। সফলভাবে সংসদ চলছে। বিলের ওপর আমাদের সংশোধনীও গৃহীত হয়েছে। এর আগে কোনও সময় পার্লামেন্টারি ইতিহাসে এ ঘটনা ঘটেনি। অনেকে অনেক কথা বলে। কারণগুলো বলেছিলাম।’
এসময় রওশন এরশাদের পাশে বসে হাসতে দেখা যায় দলটির নেতা স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাঁকে। পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদও তার নেত্রীর দিকে তাকিয়ে ছিলেন।
সরকারের শরিক জাসদ সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকেও হাসতে দেখা যায়।
রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আরও বলেন, ‘আমাদের ৪০ জনকে সরকারি দলে নিয়ে যান। আমরা তো বলতে পারি না, সবাইকে নিয়ে নেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা লাগে। আমরা সরকারি, না বিরোধী দল? বিদেশে গেলে বলতে পারি না আমরা কী? আপনারা বলতে পারেন? হয় বিরোধী দল হতে হবে, না হয় সরকারি দল হতে হবে। বিরোধী দলের দরকার নেই।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন