জীবনে সফল হতে চাইলে আজই এই ৪টি শব্দ বলা বন্ধ করুন
নিজেকে ক্ষুদ্র কোনো সীমার মধ্যে বেঁধে ফেলবেন না আর। কারণ দুনিয়াটা ইতিমধ্যেই বসবাসের জন্য বেশ কঠিন একটা জায়গায় পরিণত হয়েছে। নিজেই নিজের সার্বক্ষণিক সমালোচক হয়ে উঠবেন না। নিজের ব্যাপারে আপনার করা মূল্যায়নগুলোকে আর আপনার নিজেকে মনপ্রাণ দিয়ে গ্রহণ করা থেকে বাধা দানে সুযোগ করে দিবেন না। আপনার ইগোকে আপনাকে পিঁছু টেনে ধরতে দিবেন না।
আমাদের সকলের মধ্যেই ভেতরগত এই সমালোচকটি আছেন। যা আমাদের মস্তিষ্কেও সক্রিয়ভাবে তৎপর থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে এই ভেতরগত সমালোচকটি খুবই শক্তিশালী হয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে হালকা হয়। ভেতরগত সমালোচক আপনার নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই ভালো একটি ধারণা হতে পারে। কিন্তু আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন এটি আপনার উপকারের চেয়ে বরং ক্ষতিই বেশি করতে পারে?
এর মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে বিশেষ কিছু কথা বারবার বলতে থাকি। আমাদের সেই বিশ্বাসগুলো আমাদের চারপাশে একটি কঠিন দেয়াল গড়ে দেয়। যা থেকে বের হয়ে আসাটা আমাদের জন্য বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে।
এখানে রইল এমন কয়েকটি শব্দের তালিকা যেগুলো এখনই আপনার নিজেকে বলা বন্ধ করা উচিত।
১. দুঃখিত
ক্ষমা চাওয়াটা একটা শিল্প। আর কেউই তা অত সহজে রপ্ত করতে পারেন না। তথাপি কিছু কিছু মানুষ এই শব্দটিকে তাদের জীবনের ব্রত হিসেবে নেন। এবং মাথা থেকে টুপিটি পড়ে গেলেও আবেগে গদগদ হয়ে সরি বা দুঃখিত বলতে থাকেন।
আপনি যদি কোনো ভুল করেন বা কাউকে আঘাত করেন তাহলে দুঃখ প্রকাশ বা ক্ষমা চাওয়াটা ভালো। কিন্তু ক্ষমা চাওয়াকেই জীবনের মন্ত্র করে তুললে তাতে বরং হিতে বিপরীত হতে পারে। এর ফলে একটা সময়ে গিয়ে আপনার আত্মসম্মানবোধ তলানিতে এসে ঠেকতে পারে। এর পরিবর্তে বরং ধন্যবাদ বা প্লিজ বলুন। দেখবেন আপনার জীবনে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসে যাবে।
২. চেষ্টা
‘আমি চেষ্টা করব’ এই শব্দটি ডিভোর্স পেপারগুলোর চেয়েও বেশি সম্পর্ক নষ্ট করেছে। চেষ্টা করা ভালো। আর আমাদের জীবনের সব কিছুতেই সেরাটা দেওয়ার জন্য আমরা সেরা চেষ্টাটা করি। তথাপি সবসময়ই মনে রাখবেন এই শব্দটিতে প্রতিজ্ঞার একটা ঘাটতি আছে। আপনি যখন বলেন আপনি কোনো কিছু করার জন্য চেষ্টা করবেন তখন আসলে আপনি আপনার মস্তিষ্ককেও বলছেন যে আপনি হয়তো বিশ্বাসই করেন না কাজটি করতে আপনি যথেষ্ট সক্ষম। এই শব্দটি না বলে বরং আপনি- ‘আমি পারব’ বা ‘আমি আমার সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব’ এসব কথা বলতে পারেন। এর ফলেও আপনার নিজের প্রতি বিশ্বাস বাড়বে।
৩. উচিত
উচিত বা হতে পারত এই ধরনের শব্দ দিয়ে বুঝায় যা হয়তো হতে পারে কিন্তু এখন হচ্ছে না। আর এখানেই আসল সমস্যাটা। ‘বিষয়টি আমার এভাবে বলা উচিত ছিল’ বা ‘আমার আরো কঠোর পরিশ্রম করা উচিত’ এসব বলে আপনি আসলে পালাতে চান। এবং এখনকার কাজটি কালকের জন্য ফেলে রাখেন। উচিত শব্দটি আসলে খুবই কর্কশ যা আপনার কাঁধে অসংখ্য প্রত্যাশার বোঝা চাপিয়ে দেয়। এই শব্দটি অভিমত বা মুল্যায়নমূলকও বটে। আর এর দ্বারা পরিচালিত হওয়া ক্ষতিকরও বটে।
৪. খারাপ
আপনি নিজেকে কোনো কিছু করার কারণে খারাপ হিসেবে ট্যাগ করেন তখন আপনি আসলে নিজের মনকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করেন যে আপনি কোনো পাপ করে ফেলেছেন। আপনার প্রতিদিনের স্বাভাবিক জীবন-যাপনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এমন বাজে মনোভাবগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে খারাপ। যা সাফল্য অর্জনে আপনার সক্ষমতাগুলোকেও ধ্বংস করতে পারে। আসলে কোনো জিনিসের মধ্যে ভালো বা খারাপ বলে কিছু থাকে না। ভালো বা খারাপ বিষয়টি শুধু মনোভাবের মধ্যেই বিরাজ করে। সুতরাং জীবনে সফল হতে চাইলে নিজের প্রতি নিজের মনোভঙ্গি বদলান।
আমাদের মন-মানসিকতার ওপর আমাদের ভাষার গভীর প্রভাব পড়ে। সুতরাং আমরা নিজেদেরকে কী বলছি, না বলছি সে সম্পর্কে সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন