ঝড়ের তাণ্ডবে ৪২ ঘন্টা যাবত বিদ‍্যুৎবিহীন ভূরুঙ্গামারী

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে দুই দিনের মধ্যে রাতের ঝড়ের তাণ্ডবে ৪২ ঘন্টা যাবত বিদ‍্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে গোটা উপজেলাবাসী। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ‍্যুৎ না থাকায় ফ্রিজে রাখা মাছ, মাংসসহ অন‍্যান‍্য খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিদ‍্যুতের অভাবে অটোরিক্সা চার্জ দিতে না পারায় রাস্তাঘাট প্রায় বাহন শূন‍্য হয়ে পড়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।

উপজেলা জুড়ে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার (২৮ মে) ও বুধবার (২৯ মে ) দিবাগত রাতে ঝড় ব‍্যাপক তান্ডব চালায় উপজেলা জুড়ে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা ঝড়ে গাছপালা উপড়ে পড়ে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভেঙে গেছে, নষ্ট হয়ে গেছে একাধিক মুরগির খামার। এছাড়া ঝড়ো হাওয়ার সাথে প্রচন্ড বৃষ্টিতে কৃষকের উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলার কয়েকটি এলাকার বিদ‍্যুুৎ লাইন সচলের খবর পাওয়া গেলেও অধিকাংশ এলাকা ছিলো বিদ‍্যুৎ বিহীন।

সরেজমিনে উপজেলা দেওয়ানের খামার, কামাত আঙ্গারিয়া, বাগভান্ডার, সোনাতুলী, পশ্চিম ছাট গোপালপুর, চর ভূরুঙ্গামারী, পাইকেরচড়া ও ইসলামপুর গ্রাম ঘুরে দেখাগেছে, মধ্যে রাতের ঝড়ের তান্ডবে বিভিন্ন জাতের বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। ভেঙ্গে গেছে সুপারিগাছ সহ অন‍্যান‍্য গাছপালা। উড়ে গেছে টিনের চাল ভেঙ্গে গেছে কাঁচা ঘরবাড়ি। ঝড়ে ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার গ্রামের মনিরুজ্জামান, গিয়াস উদ্দিন ও শরীফসহ বেশ কয়েকজনের বড় বড় মেহগনি, ইউক‍্যালিপটাস, শিমুশ ও সুপারি গাছে ভেঙে গেছে।

সোনাহাট সেতু পাড়ের ঐতিহ্যবাহী প্রায় অর্ধ শতাব্দীর বট গাছটি উপরে পড়েছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদের ভিতরে বেশ কিছু গাছ ও ডাল ভেঙ্গে পড়েছে।

পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকের ছড়া গ্রামের মেছবাহ, আলম. রানা ও আনোয়ার জানান তাদের গ্রামের ১০-১২ টি টিনসেট বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক গাছ পালা ভেঙ্গে পড়েছে।

গৃহবধু মনোয়ারা বেগম জানান, তার বাসার ফ্রিজে প্রতিবেশিসহ নিজের পরিবারের মাছ, মাংসসহ অনেক খাবার সংরক্ষিত আছে। কিন্তু গত দুই দিন যাবত বিদ‍্যুৎ না থাকায় তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

অটো চালক শাহিন জানান, গত দুই দিন থেকে কারেন্ট নাই রিক্সা চার্জ দিতে পারি নাই। একদিন রিক্সা না চালালে পরিবারের খাবার জোটে না। খুব কষ্টে আছি।

বিদ‍্যুৎ বিভাগ বলছে, ঝড়ে গাছ পালা উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উপজেলা জুড়ে বিদ‍্যুৎ সর্বরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে লোডশেডিং বিরাজ করছে ৪২ ঘন্টা যাবত। তবে বিদ‍্যুৎ লাইন সচল করতে একযোগে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তারা। বিকেল নাগাদ সকল লাইনে বিদ‍্যুৎ সচল হবে বলে জানায় উপজেলা পল্লী বিদ‍্যুৎ বিভাগ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুর আলম বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ কোন সহযোগিতার আবেদন করেনি। ঝড়ে উপজেলায় কি পরিমান সম্পদের ক্ষতি হয়েছে তা নির্ধারণের কাজ চলছে।