ঝাঁকে ঝাঁকে পড়ছে ইলিশ! ইলিশ নিয়ে কক্সবাজার মৎস্যঘাটে ফিরছে ট্রলার
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2022/07/cox-3-20220724203423.webp)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নিয়ে কক্সবাজার মৎস্যঘাটে ফিরছে ট্রলার কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রথমদিনই এসেছে প্রায় ১২ টন ইলিশ
সরকারি নিষেধাজ্ঞায় ৬৫ দিন বন্ধের পর ফের পুরোদমে শুরু হয়েছে মাছ ধরা। দীর্ঘ দুই মাসের অলস সময় কাটিয়ে মাছ ধরতে নেমেছেন লক্ষাধিক জেলে। পূর্ব ঘোষণা অনুসারে শনিবার (২৩ জুলাই) মধ্যরাতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। মাঝের সময়টাতে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ছিল সুনসান নীরবতা। ছিল না জেলেদের আনাগোনা কিংবা মাছ ব্যবসায়ীদের হাঁকডাক।
তবে, সকাল হতেই পাল্টাতে শুরু করে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের দৃশ্যপট। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাছ ব্যবসায়ী ও জেলেদের পদচারণায় মুখরিত হতে থাকে ফিশারিঘাট প্রাঙ্গণ। নিষেধাজ্ঞা ওঠার প্রথমদিনই ঘাটে আসে মাছভর্তি ট্রলার। রোববার (২৪ জুলাই) কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ১১ টন ৭০০ কেজি ইলিশসহ সাড়ে ১৬ টন মাছ বিক্রি হয়েছে।
জেলেরা জানান, দীর্ঘ ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। একারণে খেয়ে না খেয়ে তাদের জীবনযাপন করতে হয়েছে। তাই অনেকেই নিষেধাজ্ঞার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই চোরাপথে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকূল থেকে সাগরে মাছ ধরতে চলে যান। তারাই নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার প্রথমদিনেই ইলিশ, লাল পোয়া, মাইট্যাসহ নানা প্রজাতির মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরেছেন।
শনিবার মধ্যরাত থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে গেছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
নুনিয়ারছড়ার বাসিন্দা ও একটি ট্রলারের জেলে শফিউল আলম বলেন, দীর্ঘদিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। তাই মাছের জন্য বেশিদূর যেতে হচ্ছে না। বঙ্গোপসাগরের ৪০-৬০ কিলোমিটার গভীরে গিয়ে জাল ফেললেই ইলিশ ধরা পড়ছে। চার-পাঁচ দিনের মধ্যে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছে ভরে উঠবে হাটবাজার।
কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগেও কক্সবাজার উপকূলে ইলিশের খুব একটা দেখা পাননি জেলেরা। তবে এবার বড় ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলায় ছোট-বড় মাছ ধরা ট্রলার আছে প্রায় ছয় হাজার। এসব ট্রলারে জেলে-শ্রমিকের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি। এর মধ্যে মৎস্য বিভাগের নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ৬৩ হাজার ১৯৩ জন। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নিবন্ধিত জেলে পরিবারগুলো ৫৬ কেজি করে চাল পেলেও অনিবন্ধিত জেলে পরিবারে কিছুই জোটেনি।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী চার-পাঁচদিনের মাথায় অন্তত তিন হাজার ট্রলার ইলিশসহ অন্যান্য মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরবে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে ইলিশসহ বিপুল সামুদ্রিক মাছ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হবে।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার আহসানুল হক বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথমদিনে অনেক মাছ ধরার ট্রলার অবতরণ কেন্দ্রে এসেছে। রোববার ফিশারিঘাটে সাড়ে ১৬ টন মাছ বিক্রি হয়। এর মধ্যে ১১ টন ৭০০ কেজি ইলিশ। প্রতিটি ইলিশ ৬০০/৭০০ গ্রাম ওজনের।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান বলেন, নিষেধজ্ঞা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে থেকেই বিভিন্ন ঘাটে মৎস্য অফিসের লোকজন দায়িত্ব পালন করেছেন, যাতে কোনো ঘাট থেকে জেলেরা সাগরে যেতে না পারেন।
প্রথমদিনে এত মাছ কীভাবে আসলো তার ব্যাখ্যা হিসেবে তিনি বলেন, ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলেদের মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে যাওয়ার দরকার হচ্ছে না। এছাড়া প্রতিদিন কিছু মাছ ব্যবসায়ী মাছ কেনার জন্য ট্রলার নিয়ে সাগরে যান। এমন কিছু ট্রলার রোববারও সাগরে যায় মাছ কিনতে। তারাই বিভিন্ন ট্রলার থেকে মাছ কিনে ফিরেছে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন