টাঙ্গাইলে অপহরণের পর দুই শিশু হত্যায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দুই শিশুকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় ৯ আসামির মধ্যে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড, তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের এ রায় ঘোষণা করেন অতিরিক্ত জেলা ২য় আদালতের বিচারক সাউদ হাসান।
মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে মিল্টন, একই গ্রামের শামছুল হকের ছেলে বাহাদুর মিয়া ও মির্জাপুর উপজেলার সুজানিলজা গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে রনি মিয়া।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-ধামরাই উপজেলার চৌহাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শাহিনুর এলাইজ শাহা, শশ্বধরপট্টি গ্রামের মমরেজের ছেলে জহিরুল ইসলাম ও মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলীপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক।
এছাড়া বাকি তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ, মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলীপাড়ার জব্বার মল্লিকের ছেলে জাকির হোসেন ও ধামরাই উপজেলার চর চেহৈাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শামীম মিয়া। তাদের মধ্যে আরিফ পলাতক।
অতিরিক্ত সরকারী কৌঁসলি (এপিপি) খোরশেদ আলম জানান, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে ঢাকার ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট এলাকার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ও ধারমাইয়ের বালিয়া ব্রাক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শাকিল (১১) ও একই গ্রামের প্রবাসী আবু বক্করের ছেলে ইমরান (১১) বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার হারিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয়।
পরদিন ২৮ জানুয়ারি মোবাইল ফোনে দুজনের জন্য দুই পরিবারের কাছে এক লাখ করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে ২৯ জানুয়ারি রাতে মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে নিখোঁজ ওই দুই শিশুর গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ৩০ জানুয়ারি নিহত শাকিলের মা জোসনা বেগম বাদি হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ৮ জুন আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। এতে দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এরপর পুলিশ ৮ আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। বাকি এক আসামি এখনও পলাতক।
এ হত্যা মামলায় অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন- ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের রমজান আলীর ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম (৩০) ও মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের ময়নাল হকের স্ত্রী মনোয়ার (৩৮)। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আরিফ পলাতক রয়েছেন।
নিহত শাকিলের মা জোসনা বেগম বলেন, আসামিদের যে রায় দেওয়া হয়েছে তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। দ্রুত রায় কার্যকর করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন