টানা বৃষ্টিপাতে ফুঁসে উঠেছে তিস্তার পানি, যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সিকিম-কালিম্পং

একদিকে গরমে নাজেহাল কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলা। বৃষ্টির দেখা নেই, তীব্র গরমে সতর্কতা জারি করেছে কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। অন্যদিকে, টানা ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের জনজীবন। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে ফুঁসে উঠেছে তিস্তা নদীর পানি। তলিয়ে গেছে জাতীয় সড়ক, দেখা দিয়েছে ভূমিধস।

কয়েকদিন ধরেই লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে দার্জিলিং, কালিম্পং, ডুয়ার্সসহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ পাহাড়ি অঞ্চলে। একটানা বৃষ্টি ফলে কালিঝোরা, রবিঝোড়া, ২৭ মাইল এলাকায় ধস নামে। দার্জিলিংয়ের সেবক থানা থেকে সেবকেশ্বরী কালিবাড়ি সংলগ্ন অঞ্চলেও ভূমিধস দেখা গেছে।

প্রবল বর্ষণের জেরে তিস্তা নদীর পানি উপচে জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে বইছে। তলিয়ে গেছে দার্জিলিংয়ের রাস্তাঘাট। নতুন করে ধস নামার কারণে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সিকিম তো বটেই, ওই পথে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে কালিম্পং শহর। ধসের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কও।

উত্তর সিকিমে বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়েছেন এক হাজারের বেশি পর্যটক, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিদেশিও রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছে সিকিম প্রশাসন।

সিকিম পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে তিস্তা নদীর পানির স্তর এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, সমতলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকতে শুরু করেছে জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রামে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্যে বাঁধের ওপর প্লাস্টিকের অস্থায়ী তাঁবু বানিয়ে আশ্রয় নিয়েছে তারা।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় সজাগ রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। নদী পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে স্থানীয়দের। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম, হেল্পলাইন নম্বর। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে।

দার্জিলিংয়ের সংসদ সদস্য রাজু বিস্তা জানিয়েছেন, গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা রয়েছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর ক্ষেত্রে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে।

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দার্জিলিং, কালিম্পংসহ উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি,আলিপুরদুয়ারে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে তিস্তার পানি আরও বেড়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।