টার্গেট ঈদ : ঢাকায় মাদকের মজুদ বাড়ছে
ঈদের আর কয়েকদিন বাকি। সবাই ব্যস্ত ঈদ কেনাকাটায়। তবে বসে নেই মাদক কারবারিরা। তারা গোপনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন এবং দেশি-বিদেশি মদ-বিয়ার মজুদ করছে। সীমান্ত দিয়ে এসব মাদক আসছে বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘ঈদের সময় মাদকের সরবরাহ বাড়ার আশঙ্কায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ১৪টি সার্কেলে বিভক্ত হয়ে রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। তবে এক্ষেত্রে জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। মাদককের ব্যাপারে কোনো তথ্য থাকলে অধিদপ্তরের নিকটস্থ অফিসকে জানানোর অনুরোধ করছি।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের কাছে তথ্য আছে এ সময় মাদক চোরাকারবারিরা মাদকের মজুদ করে। এ জন্য পুলিশকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে। সেভাবেই পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ মাদকও উদ্ধার হচ্ছে।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে মাদক ব্যবসায়ীরা তৎপরতা শুরু করেছে। রমজানের শুরুতেই রাজধানীর ফার্মগেট ও মিরপুর এলাকায় দুটি বড় মাদকের চালান আটক করে পুলিশ। তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা বলেছে, বড় বড় মাদকের চালান আসছে। যা পরে খুচরা মাদক বিক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক কেনাবেচা হলেও এর মূল বাজার রাজধানী ঢাকা। ছয়টি রুট দিয়ে মাদক ঢাকায় প্রবেশ করছে। কাঁচপুর হয়ে চট্টগ্রাম রুট, কেরানীগঞ্জ-বুড়িগঙ্গা সেতু রুট, সাভার-গাবতলী রুট, টঙ্গী-আব্দুল্লাহপুর রুট, আশুলিয়া-বেড়িবাঁধ রুট ও বুড়িগঙ্গা-তুরাগ হয়ে নৌপথ দিয়ে এসব মাদক আসছে। ট্রেনে ও ট্রাকে আসা ফেনসিডিলের চালান খালাস হয় টঙ্গী, সাভার, মানিকগঞ্জ, আশুলিয়া, কাঁচপুর, কেরানীগঞ্জ এলাকায়। তারপর সেখান থেকে ভাগে ভাগে আনা হয় ঢাকায়। প্রাইভেটকার ও ট্রেনে আসা ইয়াবার চালান, কাঁচপুর, শিমরাইল, টঙ্গীসহ রাজধানীর উপকণ্ঠে খালাস করা হয়। তবে এসব স্থানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, এ সময় ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ, ম্যান্ডেলা বিয়ার, হিরো হুইস্কি, গ্রান্ড রয়েল হুইস্কি, লন্ডন রাম, টাইগার রাম, ম্যান্ডেলা রাম, আন্দামান গোল্ড বিয়ার, রয়েল ডিস্টিলারি, বস আপ, রেড হর্স ডিস্টিলারি, জিনস মদ, অরেঞ্জ মদ ও বাংলা মদ বিশেষ মজুদের তথ্য রয়েছে। আর মিয়ানমার সীমান্তে টেকনাফ ও আশপাশে ব্যাপক অভিযানের কারণে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গা-ঢাকা দিলেও ঈদকে সামনে রেখে কিছু ব্যবসায়ী আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ফেনসিডিলের চালান ঢুকছে। সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকে গাঁজা ও ফেনসিডিল বাংলাদেশে ঢুকছে। হেরোইন আসছে যশোর সীমান্ত দিয়ে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফেনসিডিল আসছে পণ্যবাহী ট্রাকে এবং কুমিল্লা ও আখাউড়া সীমান্ত থেকে গাঁজা আসছে প্রাইভেটকার ও যাত্রীবাহী বাসে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন