টিকটক বিক্রি করে দিতে হবে, নইলে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ : বিবিসি
চীনা ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকের ওপর ক্রমশ চাপবৃদ্ধি করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলছে, টিকটককে অবশ্যই বিক্রি করে দিতে হবে, নইলে এটি নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
চীনা কোম্পানি বাইটডান্স টিকটকের মূল কোম্পানি। এর বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর বহুদিনের অভিযোগ যে, তারা ব্যবহারকারীদের ফোন থেকে তথ্য চুরি করছে এবং সেসব তথ্য চীন সরকারের কাছে হস্তান্তর করছে। যদিও এমন দাবি বরাবরই উড়িয়ে দিয়েছে টিকটক।
বিবিসির খবরে জানানো হয়, টিকটকের মালিকানা পরিবর্তন নিয়ে মার্কিন চাপের বিষয়টি প্রথম রিপোর্ট করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। তবে এরপর বিবিসির কাছেও আলাদাভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে টিকটক। যদিও কোম্পানিটির দাবি, জোর করে এভাবে টিকটক বিক্রি করলে ডাটা ফ্লো’র কোনো পরিবর্তন আসবে না। হোয়াইট হাউস যদিও এ বিষয়ে বিবিসির প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণকে কোম্পানির জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে উল্লেখ করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। কোম্পানিটি দুই বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে প্ল্যাটফর্মটির ভবিষ্যৎ নিয়ে মার্কিন সংস্থা ‘কমিটি অন ফরেইন ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য ইউনাইটেড স্টেটস (সিএফআইইউএস)’-এর সঙ্গে আলোচনা করছে। টিকটক এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বহু দাবি মেনেও নিয়েছে।
কিন্তু এরপরেও কোম্পানিটির বিরুদ্ধে চাপ অব্যাহত রেখেছে ওয়াশিংটন। ‘সিএফআইইউএস’ টিকটককে বলছে, তারা চায় বাইটড্যান্স যেন প্ল্যাটফর্মে নিজের মালিকানা বিক্রি করে দেয়। এমনটা না ঘটলে, অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয়ভাবে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ ও সিনেট, সম্প্রতি দুটো জায়গাতেই এমন বিল উত্থাপিত হয়েছে। এসব বিলের কারণে টিকটক’সহ বিদেশী অ্যাপগুলো নিষিদ্ধ করা এখন মার্কিন সরকারের জন্য বেশ সহজ বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় প্রথম টিকটকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেয়া হয়েছিল। প্রথম দিকে টিকটক নিয়ে কিছুটা উদারপন্থী অবস্থান নিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। তবে সেই অবস্থা দ্রুত পাল্টে যায়। এখন ক্রমশ টিকটকের কার্যক্রম বন্ধে তৎপর হয়ে উঠেছে মার্কিন সরকার।
ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ও টুইটারের মতো টিকটকও ব্যবহারকারীর ব্যাপক পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে। এই তথ্য ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোর কাছে বিক্রি এবং টার্গেট কাস্টমার খুঁজে বের করে আয় করে কোম্পানিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, টিকটক শুধু মার্কিন ব্যবহারকারীদের তথ্যই নিচ্ছে না, এগুলোকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছেও হস্তান্তর করছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়ছে।
তবে টিকটক জানিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের প্রস্তাবিত সকল দাবি মেনে নিয়েছে। এখনও তারা আশা করছে সব ঠিকঠাক থাকবে এবং মার্কিনিদের আশ্বস্ত করেই তারা টিকটক সার্ভিস চালু রাখতে পারবে।
যদিও এ সপ্তাহের শুরুতে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে উঠে আসে যে, সিএফআইইউএস-এর সঙ্গে আলোচনা এগোতে ‘বাইটড্যান্স থেকে আলাদা হওয়ার সম্ভাবনা’ নিয়ে আলোচনা করেছেন টিকটকের নির্বাহীরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন