টুইটারের কাছে একটি অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের কাছে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট-সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে ওই অ্যাকাউন্ট-সম্পর্কিত তথ্য চাওয়া হয় বলে টুইটারের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতি ছয় মাস অন্তর টুইটার তাদের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অনলাইনে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে কোনো দেশের সরকারের তরফে টুইটারকে কী ধরনের অনুরোধ করা হয়, সে তথ্য থাকে। তবে কোন অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়, তা উল্লেখ করা হয় না।
টুইটারের ট্রান্সপারেন্সির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তারা বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে দেখা যায়, এ বছরের প্রথম ছয় মাসে নির্দিষ্ট একটি অ্যাকাউন্টের তথ্য জানতে চেয়েছে সরকার। এর আগে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে চারটি অনুরোধ করেছিল সরকার, যাতে সাড়া দিয়েছিল টুইটার। সেবার সব কয়টি অ্যাকাউন্টের তথ্য দিয়েছিল টুইটার কর্তৃপক্ষ।
২০১৫ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে ১০টি অনুরোধে ২৫টি অ্যাকাউন্টের তথ্য জানতে চাইলে ৬০ শতাংশ তথ্য দিয়েছিল টুইটার।
টুইটারের অনলাইনে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে এবার যে অনুরোধটি গেছে, সেটি জরুরি প্রকাশের অনুরোধ বা ইমার্জেন্সি ডিসক্লোজার রিকোয়েস্ট। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সর্বমোট টুইটারের কাছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ১৫টি অনুরোধ গেছে। সবই ছিল জরুরি তথ্য পাওয়ার অনুরোধ।
এর আগে এ বছরের নভেম্বরে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের হিসাব নিয়ে ফেসবুক তাদের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফেসবুকের কাছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য চাওয়ার হার বেড়েছে। সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ৫৭ শতাংশ ক্ষেত্রে তথ্য সরবরাহ করেছে ফেসবুক।
ফেসবুকের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসে চাওয়া তথ্যের পরিমাণ এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মোট ১৫২টি অনুরোধ করা হয়েছে ফেসবুককে। ১৩৪টি জরুরি অনুরোধ আর ১৮টি আইনি অনুরোধ। এর মধ্যে ২০৫ জন ব্যবহারকারী বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট-সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। ফেসবুক এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ ক্ষেত্রে তথ্য সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে জরুরি ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ ও আইনি ক্ষেত্রে ২৮ শতাংশ তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা আইএএনএস বলছে, ২০১৫ সালে জুলাই-ডিসেম্বরের পর থেকে বিশ্বজুড়ে সরকারের তরফ থেকে টুইটারের কাছে তথ্য চাওয়ার হার এবারই বেশি। এবার অনুরোধের হার ১০ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া ৮০ শতাংশ আইনি অনুরোধও বেড়েছে।
টুইটার প্রথমবারের মতো স্প্যাম ও ক্ষতিকর অটোমেশন প্রোগ্রামের বিরুদ্ধে তাদের গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করেছে। টুইটার কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি মাসে লাখো স্প্যাম অ্যাকাউন্টের সঙ্গে তাদের লড়াই করতে হয়। এগুলো সঠিক কি না, তা যাচাইয়ে ই-মেইল ও ফোন নম্বর পরীক্ষা করতে হয়। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে যেসব অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করা হয়েছে, এর ৭৫ শতাংশ ব্যর্থ হয়েছে এবং সেগুলো মুছে দিয়েছে টুইটার। এর বাইরে শিশুদের যৌন নিপীড়নবিষয়ক নীতিমালা ভঙ্গ করায় ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৬৩ অ্যাকাউন্ট বাতিল করা হয়েছে। এর বাইরে ২ লাখ ৫ হাজার ১৫৬ অ্যাকাউন্ট সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রচারের কারণে বন্ধ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হককে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন