টুথপেস্টে আছে বিষ! তাহলে উপায়?
গত দুই দশক ধরে সারা বিশ্বজুড়ে মানবদেহের ওপর টুথপেস্টের খারাপ প্রভাব সম্পর্কে একাধিক গবেষণা হয়েছে। আর সবকটিতেই একটি বিষয় লক্ষ করা গেছে, টুথপেস্ট বানাতে বহুজাতিক কম্পানিগুলি সোডিয়াম লরেল সালফেট, ফ্লুরাইড, ট্রিকোলসাম এবং আর্টিফিশিয়াল সুইটনার-এর মতো উপাদান ব্যবহার করছে, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। যেমন সোডিয়াম লরেল সালফেটের কথাই ধরুন না। ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা অনুসারে এই উপাদানটি আমাদের স্বাদ গ্রন্থিদের নষ্ট করে দেয়। সেই সঙ্গে স্কিন ইরিটেশন, এমনকি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে, ট্রিকোলসাম এবং আর্টিফিশিয়াল সুইটনারও নানা দিক থেকে শরীরের ক্ষয় ঘটিয়ে থাকে।
কিন্তু তাহলে উপায় কী? বাজার চলতি টুথপেস্টের বিকল্প হিসেবে একাধিক ঘরোয়া উপাদানকে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন ধরুন…..
১. বেকিং সোডা
দাঁতকে ভেতর এবং বাইরে থেকে সুস্থ রাখতে এই উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। ২০০৮ সালে জার্নাল অব ক্লিনিকাল ডেন্টিস্ট্রিতে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে দাঁতকে শক্তপোক্ত করার পাশাপাশি হলুদ ভাব কাটাতে বেকিং সোডা দারুণভাবে কাজে আসে। এক্ষেত্রে ব্রাশটা অল্প করে ভিজিয়ে নিয়ে বেকিং সোডার মধ্যে একটু ঘষে নিয়ে সেই ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজতে শুরু করে দিন। ব্যাস তাহলেই কেল্লাফতে! তবে খেয়াল রাখবেন বেকিং সোডা দিয়ে দাঁত মাজার পর ৩০ মিনিট কোনও খাবার খাওয়া চলবে না।
২.হলুদ
দাঁতের স্বাস্থ্যকে ভাল রাখতে শতাব্দী প্রচীন এই ভারতীয় মশলাটি দারুন উপকারে লাগে। আর সবথেকে ভাল দিক হল হলুদ শরীরের পক্ষে খুবই উপকারি, তাই তো দাঁত মাজতে মাজতে যদি একটু হলুদ পেটেও চলে যায়, তাহলেও কোনও চিন্তা নেই। এখন প্রশ্ন হল, কীভাবে ব্যবহার করবেন হলুদকে? একটা বাটিতে অল্প করে হলুদ নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা সরষের তেল মিশিয়ে ভাল করে মেখে নিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেটি ব্রাশে লাগিয়ে দাঁত মাজুন। আরেকভাবেও দাঁতের সুরক্ষায় হলুদকে কাজে লাগানো যেতে পারে। কীভাবে? এক গ্লাস পানিতে পরিমাণ মতো হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে নিন ভাল করে। তারপর সেই পানি দিয়ে মুখ কুলকুচি করুন। কম করে ৩০ সেকেন্ড পানিটা মুখে রেখে ফেলে দিন।
৩. নারকেল তেল
অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানে সমৃদ্ধ এই প্রাকৃতিক উপাদানটি দাঁতকে পোকা লাগার হাত থেকে যেমন রক্ষা করে, তেমনি মাড়ির স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বহুদিন পর্যন্ত দাঁতকে সুন্দর রাখতে পেস্টের পরিবর্তে নারকেল তেল ব্যবহার করতেই পারেন। এক্ষেত্রে এক চামচ নারকেল তেল মুখে ফেলে কম করে ১৫ মিনিট কুলকুচি করুন। সময় হয়ে গেলে ফেলে দিয়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে আরেকবার কুলকুচি করে নিন। ব্যাস তাহলেই চলবে।
৪. লবণ
একেবারেই ঠিক শুনেছেন। আপনি চাইলে লবণকে কাজে লাগিয়েও দাঁতকে সুস্থ-সুন্দর রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে ব্রাশটা একটু পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে লবণের মধ্যে ঘষে নিন। তারপর সেই ব্রাশটা দিয়ে দাঁত মাজুন। এই পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে দিনে একবার ব্রাশ করলেই দেখবেন দাঁত নিয়ে আর কিছু ভাবতে হবে না। প্রসঙ্গত, লবণের সঙ্গে সম পরিমাণে বেকিং সোডা মিশিয়েও দাঁত মাজতে পারেন। এমনটা করলে দারুন উপকার পাওয়া যায়।
৫. কমলা লেবুর খোসা
২০১০ সালে আমেরিকান জার্নাল অব ডেন্টিস্ট্রিতে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে, কমলা লেবুর খোসায় উপস্থিত ভিটামিন সি সহ একাধিক পুষ্টিকর উপাদান দাঁতকে পোকা লাগার হাত থেকে রক্ষা করে। সেই সঙ্গে হলুদ ভাব কমাতেও সাহায্য করে। এক্ষেত্রে লেবুর খোসা সরাসরি দাঁতে ঘষতে পারেন। আর যদি এমনটা করতে ইচ্ছা না করে তাহলে খোসাটা শুকিয়ে নিয়ে মিক্সিতে গুঁড়ো করে নিন। তারপর সেই গুঁড়ো ব্রাশে লাগিয়েও দাঁত মাজতে পারেন।
৬. নিমের ডাল
নিমের ডাল দিয়ে দাঁতা মাজার অভ্যাসতো আমাদের হাজার বছরের পুরোনো অভ্যাস। সুতরাং তা নিয়ে আর বাড়তি কিছু বলার দরকার আছে বলে মনে করি না।
সূত্র: বোল্ড স্কাই
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন