ট্যাক্সি চালক থেকে যেভাবে জঙ্গি দলে আকায়েদ
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে বাস টার্মিনালে আত্মঘাতী বোমা হামলার চেষ্টায় আটক বাংলাদেশি তরুণ আকায়েদ উল্লাহ সাত বছর আগে ফ্যামিলি ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। নিউইয়র্ক পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ বছর বয়সী আকায়েদ প্রথমে ট্যাক্সি চালাতেন। পরে একটি আবাসন নির্মাতা কোম্পানির বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির চাকরি নেন। ব্রুকলিনের অ্যাপার্টমেন্টে বসে ইন্টারনেট ঘেঁটে তিনি বোমা বানানো শেখেন এবং ইলেকট্রিশিয়ানের কাজের সূত্রে কর্মস্থলে বসেই বোমা তৈরি করেন বলে তদন্তকারীদের ধারণা। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সন্ত্রাসীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন তিনি। খবর দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স ও এএফপির।
সোমবার সকালে ম্যানহাটনের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে নিজের শরীরে বাঁধা ‘পাইপ বোমা’ বিস্ফোরণ ঘটান আকায়েদ। বোমাটি ঠিকমতো বিস্ফোরিত না হওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু গুরুতর আহত হন। তার বিস্ফোরণে আহত হন তিন পুলিশ সদস্য।
আকায়েদ চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মুছাপুর ইউনিয়নের মো. সানাউল্লাহর ছেলে। ২০১১ সালে ফ্যামিলি ভিসায় পরিবারের সবার সঙ্গে নিউইয়র্কে যাওয়ার পর ব্রুকলিনেই বসবাস করে আসছিলেন তিনি। বছর দুই আগে নিউইয়র্কেই মারা যান সানাউল্লাহ। আকায়েদের এক ভাই, বোন ও মা রয়েছেন নিউইয়র্কে। বিস্ফোরণের ঘটনার পর তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। আকায়েদকে চিনতেন এমন একজন বলেন, বরাবরই নিজের মধ্যে নিবিষ্ট হয়ে থাকত সে। মসজিদে গেলেও কারও সঙ্গে তেমন আলাপ করত না। নিউইয়র্ক প্রবাসী এক বাংলাদেশি ঠিকাদারের অধীনে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন আকায়েদ। একসময় ট্যাক্সি চালানোর লাইসেন্সও তার ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম লিখেছে, আকায়েদের পরিবারকে ইসলামী রীতিনীতি মেনে চলা একটি শান্তশিষ্ট পরিবার হিসেবেই জানত সবাই। উগ্রপন্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে পারে- এমন সন্দেহ কখনও তাদের হয়নি।
নিউইয়র্ক সিটি ট্যাক্সি অ্যান্ড লিমোজিন কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, ২০১২ সালের মার্চ থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত লিমোজিন বা ব্ল্যাক ক্যাব চালানোর লাইসেন্স ছিল আকায়েদের। পরে তিনি আর তা নবায়ন করেননি। আহত আকায়েদকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ম্যানহাটনের বেলভিউ হাসপাতালে। তার বক্তব্য উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক পুলিশের কমিশনার জেমস ও’নিল বলেন, সিরিয়ায় আইএসের ওপর হামলা ও ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রতিবাদে ক্ষোভ থেকে সে ওই ঘটনা ঘটায়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নিউইয়র্কে বোমা হামলার ঘটনা সেটাই দেখিয়ে দিচ্ছে যে, মার্কিন কংগ্রেসের জন্য অভিবাসন আইন সংস্কার করা ‘কতটা জরুরি’। সোমবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, চেইন মাইগ্রেশন নামে পরিচিত মার্কিন নীতির বদৌলতে ফ্যামিলি ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিল ওই যুবক। ওই অভিবাসন নীতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।-যুগান্তর
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন