‘ট্রাম্পের সঙ্গে ইউরোপের বিরোধ চরমে উঠেছে’
ইউরোপ ইরানের সঙ্গে হওয়া ২০১৫ সালের পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইরান নতুন করে পরমাণু কর্মসূচি শুরু করার প্রস্তুতি ঘোষণা দেওয়ার পর এ লক্ষ্যে ইউরোপের দেশগুলো কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউরোপের বিরোধ চরমে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল।
জার্মানি, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রীরা তাদের মার্কিন সমকক্ষ মন্ত্রীদের কাছে লেখা চিঠিতে পরমাণু সমঝোতা থেকে ইরানের বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ও এর পরিণতির ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ওই চিঠিতে ইউরোপের যেসব কম্পানি ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করতে চায় তাদেরকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় না রাখার জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ইরান যদি পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে।
ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা গত সোমবার আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’র প্রধানের কাছে লেখা চিঠিতে পরমাণু সমঝোতার আওতায় ব্যাপক মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রস্তাব দেয়ার পরই ইউরোপ কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি পরমাণু সমঝোতার কাঠামোর ভেতরে থেকেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতা এক লাখ ৯০ হাজার এসডাব্লিউইউতে উন্নীত করার প্রস্তুতি নিতে জাতীয় আণবিক শক্তি সংস্থার প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। ইরানের স্বার্থ সংরক্ষণ করা না হলে পরমাণু সমঝোতা থেকে তেহরানের বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি ইউরোপকে গভীর উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘ব্যাপক মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য ইরানের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত আইনের লঙ্ঘন নয়। কিন্তু এ পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হলে সম্ভাব্য উত্তেজনা সৃষ্টির ব্যাপারে আমরা চিন্তিত।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইউরোপীয় কমিশন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা সামলানোর জন্য ‘নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা আইন’ ব্যবহারের চিন্তাভাবনা করছে। তাদের এ পদক্ষেপের ফলে ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক ইউরোপীয় কম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
১৯৯৬ সালে কিউবার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা মেকাবেলায় ইউরোপ ওই আইন অনুমোদন করেছিল যদিও তা কখনো ব্যবহার করা হয়নি। বর্তমানে ওই আইনের সংশোধন করা উচিত যাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় আইনটি ব্যবহার করা যায়। এই আইনটি বাস্তবায়িত হলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি থেকে ইউরোপের কম্পানিগুলোকে রক্ষা করা যাবে। আইনটি কার্যকর করা হলে ইউরোপের কম্পনিগুলো সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারবে।
এ ছাড়া, ইউরোপীয় কমিশন এমন একটি আইন অনুমোদন করেছে যাতে ইউরোপের ব্যাংকগুলো ইরানে বিনিয়োগে ইচ্ছুক ইউরোপীয় পুঁজিবিনিয়োগকারীদের সহায়তা করতে পারে। ইউরোপের এসব পদক্ষেপকে পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখার জন্য নতুন করে তাদের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল বলেছেন, পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউরোপের বিরোধ চরমে উঠেছে।
সূত্র: পার্স টুডে
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন