‘ট্রাম্প আল্লাহর এক বান্দা’
সৌদি আরবের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর নিয়ে যখন নানা ধরনের বক্তব্য ও বিবৃতি দিচ্ছেন তখন আরবের বহু মানুষ টুইটারে এসব নিয়ে তাদের অবিশ্বাসের কথাও প্রকাশ করছেন।
টুইট করে তারা জানাচ্ছেন বহুল আলোচিত এই সফর নিয়ে তাদের সন্দেহের কথাও।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন সৌদি আরব সফর করছেন। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প এবং কন্যা ইভাঙ্কা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার সময় মুসলিমবিরোধী বক্তব্য, পরে বহু দেশের মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি- এতো কিছুর পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিম একটি দেশে সফরের কারণে এ নিয়ে প্রচুর আলোচনা চলছে। মানুষের মনে তৈরি হয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।
রাজধানী রিয়াদে রোববার তিনি আরব ইসলামিক অ্যামেরিকান এক সম্মেলনে ভাষণ দেবেন। বলা হচ্ছে, ট্রাম্প এসময় ইসলাম ধর্ম সম্পর্কেও কথা বলবেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সফর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর কথাবার্তা হচ্ছে। শনিবার কোনো এক পর্যায়ে টুইটারে সবচে বেশি আলোচিত ছিল ট্রাম্প কন্যার আরবি শব্দ এবং এই বিষয়টি।
অনেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে ব্যঙ্গও করছেন, ইসলাম সম্পর্কে তার করা কটূক্তির প্রসঙ্গ টেনে পোস্ট করছেন ট্রাম্পের ব্যঙ্গচিত্র।
‘শয়তানের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো’
সৌদি আরবের ধর্মীয় নেতা সাদ বিন ঘনিম গত মাসেই যে পোস্টটি করেছিলেন বহু লোক সেটির স্ক্রিন শট এখন আবার পোস্ট করেছেন। ওই পোস্টটি ডিলিট করে দেয়া হয়েছিল।
সেখানে বলা হয়েছে: ওহ আল্লাহ, ট্রাম্প হচ্ছে তোমার বান্দাদের একজন। তার ভাগ্য তোমার হাতে। তাকে আদেশ দিন যাতে, তিনি চান আর না চান, মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করেন এবং তাদের ওপর নিপীড়ন যাতে বন্ধ হয় সেজন্য যাতে তিনি কাজ করেন। তার শয়তানের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করুন এবং তাকে আপনার পথে পরিচালিত করুন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা একটি ছবিও সোশাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কম্পিউটারে তৈরি করা এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মুখে দাড়ি, মাথায় টুপি।
এসব ছবির সাথে যেসব শিরোনাম দেয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে – সৌদি ধর্মীয় নেতাদের ফতোয়া: ট্রাম্প হচ্ছেন আল্লাহর একজন দূত।
আরেকটি কার্টুনও সোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে, বিশেষ করে টুইটারে, যেখানে ইয়েমেন যুদ্ধের জন্য ট্রাম্প এবং সৌদি নেতাদের দায়ী করা হচ্ছে।
কার্টুনটিতে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প যখন বিমান থেকে নেমে আসছেন তখন সৌদি বাদশাহ তার পুত্র এবং ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে সঙ্গে নিয়ে তাকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
লাল গালিচার একপাশে পড়ে আছে ইয়েমেনিদের মৃতদেহ। আর অন্য পাশে মাথা নত করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। সৌদি রাজ পরিবারের সদস্যদের পেছনে বোরকা পরিহিত একজন নারী হাঁটু মুড়ে বসে আছেন এবং তার পেছনে তলোয়ার হাতে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি। দেখে মনে হয় যে এখনই হয়তো তার শিরশ্ছেদ করা হবে।
এই কার্টুনের নিচে অনেকে মন্তব্য করেছেন। একজন লিখেছেন, সাতটি আরব দেশের মুসলমানদেরকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর সৌদি আরবের বাদশাহ তাকে স্বাগত জানাতে ১৭টি মুসলিম দেশের নেতাদের জড়ো করেছেন।
এই সফরকে কেন্দ্র করে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সৌদি ছাত্র খালেদ আল-দাওসারির কথাও তুলে ধরছেন। মার্কিন স্থাপনায় হামলার চেষ্টা করার অভিযোগে তাকে এই সাজা দেয়া হয়।
তার মুক্তির জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে এমন একটি অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করা একটি ছবিতে দেখা যায়, ট্রাম্প এবং সৌদি বাদশাহ সালমান পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন। তার নিচে ক্যাপশন দেয়া হয়েছে: ওহ জাতি, তোমাদের একজন ছেলে আরেক দেশের কারাগারে মরছে। এখনই তার মুক্তি চাওয়ার সময়।
আবার অনেকেই বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সফর সৌদি আরবের জন্য গর্ব করার মতো এক ঘটনা।
আরেকজন লিখেছেন, সারা পৃথিবীর চোখ এখন রিয়াদের দিকে। সবাই তাকিয়ে আছেন এই সম্মেলনের সাফল্যের দিকে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন