ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে আদিবাসী নারী উদ্যোক্তা বাহামনি
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা পাড়িয়ার গ্রামের গামানিয়েল মুর্মুর স্ত্রী বাহামনি মুর্মু। তিনি ২০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে বাহামনি মুর্ম একজন হস্তশিল্প উদ্যোক্তা । জানুয়ারী ২০২২ সালে প্রথম পাপোষ তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি।
জানাযায়, তিনি একজন গৃহিনী ও স্বামী দিন মুজুর। তাঁর এক মেয়ে এক ছেলে । বড় মেয়ে পীরগঞ্জ সকারি কলেজে ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও ছোট ছেলে বাঁশগাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণী ছাত্র। সে পরিবারের কাজের পাশাপাশি পাপোষ তৈরি কাজে ব্যস্ত থাকেন। শুধু পাপোষ নয় ওয়াল আলনা, মেয়েদের সাইট ব্যাব ও ভেন্টি ব্যাগ এগুলো তৈরি করেন থাকেন।
এ প্রসঙ্গে বাহামনি বলেন, ৩ হাজার ৫ শত টাকা দিয়ে একটি মেশিন ক্রয় করে পাপোষ উৎপাদনের কাজ শুরু করেন। ১ টি পাপোষ তৈরীতে উৎপাদন খরচ ১০ টাকা, কোম্পানীর নিকট বিক্রয় করেন প্রতিপিচ ২০ টাকা। খুচরা বিক্রি ৩০-৪০ টাকা। পরিবারের কাজের পাশাপাশি দৈনিক ১০-১২ টি করে পাপোষ তৈরী করেন থাকেন। যা থেকে দৈনিক ১০০-১২০ টাকা আয় করছেন। সারাদিন শুধু এই কাজটিই করি, দৈনিক ৩৫-৪০ টি পাপোষ তৈরী করতে পারবো। যা থেকে দৈনিক ৩০০-৪০০ টাকা আয় করা সম্ভব। অর্থের অভাবে কাঁচা মাল (ঝুট ও সুতা) ক্রয় করতে পারছি না। সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা পেলে এবং কোন সংস্থা ঋণ প্রদান করলে ব্যবসায় সাফল্য অর্জন হবে। উৎপাদন বেশি হলে আয় বৃদ্ধিও পারবে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, আমার বাড়ী থেকেই প্রথম কেনা-বেচা শুরু করি। অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দোকানে একটি সেলাইমেশিন কিনে মেয়েদের কিছু কিছু পণ্য তৈরি শুরু করি এবং কোয়ালিটিসম্পন্ন কাপড় ও নিজস্ব ডিজাইন এবং মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের ইনার, কাপড়ের ব্যাগ ও কাঁথা তৈরি করে থাকি। দেশে নয়, দেশের বাইরেও বাংলাদেশের এই ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দিতে চায় আদিবাসী এ নারী।
একই গ্রামে আরও ১০ জন আদিবাসী নারী হস্তশিল্প পাপোষ তৈরি করেন থাকেন। তাঁরা বলেন, সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা দিলে আদিবাসী নারীরা আরও অনেক এগিয়ে আসবে এবং ব্যবসায় সফলতা বাড়বে। আমরা অনেক সভ্য আদিবাসী নারী, আমাদের ছেলে মেয়ে স্কুল ও কলেজে পড়াশুনা করেন।
এ ব্যাপারে বেসরকারি সংস্থা ইএসডিও’র প্রেমদীপ প্রকল্পের উপজেলা ম্যানেজার মোঃ রওশন জামাল চৌধুরী জানান, এ প্রকল্পটি আদিবাসীর উপর কাজ করে যাচ্ছেন। প্রকল্পটি ২৫ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি নারীকে এই প্রশিক্ষন প্রদান করেছেন। তারা প্রত্যেকে এখন উৎপানের সাথে জড়িত রয়েছে। অনেক আদিবাসী নারীর এ কাজে আগ্রহ বাড়ছে কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক সংকটের কারনে ৩ হাজার পাঁচশত টাকা দিয়ে পাপোষ তৈরীর মেশিন ক্রয় করতে পারছেন না। এ অঞ্চলের গ্রামীন দরিদ্র নারীদের মান উন্নয়ন ঘটবে বলে তিনি মনে করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন