ডাকলে অল্প সাড়া দিচ্ছেন, তবে শঙ্কামুক্ত নন কাদের : চিকিৎসক
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ‘জীবন শঙ্কায়’ থাকা চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ডাকলে অল্প অল্প সাড়া দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
রোববার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী আহসান।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া।
এ সময় চিকিৎসকরা জানান, ওবায়দুল কাদেরের অবস্থা এখনও আশঙ্কামুক্ত নয়।
চিকিৎসকরা জানান, রাতে ঢাকায় আসছেন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তারা আসার পর মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এই মুহূর্তে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই উল্লেখ করে চিকিৎসকরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক পরিস্থিতি বারবার অবনতি হচ্ছে। এ কারণে এই মুহূর্তে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই।
বিএসএমএমইউ’র কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী আহসান জানান, ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল তবে শঙ্কামুক্ত নন। আগামী ৭২ ঘন্টা তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
অধ্যাপক আলী আহসান বলেন, এনজিওগ্রাম করানো হলে তার তিনটি আর্টারিতে (অক্সিজেনবাহী রক্তনালী, ধমনী) ব্লক পাওয়া যায়। তার আগে থেকেই ডায়াবেটিস ছিল, সেটিও এসময় একদমই অনিয়ন্ত্রিত ছিল। এ অবস্থায় আমাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নেই, তার হৃদযন্ত্রের বাম পাশের প্রধান যে ধমনী, যেটাকে আমরা এলএডি (লেফট অ্যান্টেরিয়র ডিসেন্ডিং) আর্টারি বলি, সেটা খুলে দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে পিসিআইয়ের (পারকিউটেনাস করোনারি ইন্টারভেনশন) মাধ্যমে তার ওই ধমনীতে স্টেনটিং (রিং পরানো) করা হয়।
আলী আহসান বলেন, এ সময় ওবায়দুল কাদের ঘণ্টা দুয়েক ভালো ছিলেন। তারপর ফের তার অবস্থার অবনতি ঘটে। ইলেকট্রোলাইন ইমব্যালেন্স (রক্তে ক্যালসিয়াম, ক্লোরাইড, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম প্রভৃতি পদার্থের মাত্রায় অসামঞ্জস্যতা) দেখা দেয়।
ওবায়দুল কাদেরের সর্বশেষ অবস্থা প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী আহসান বলেন, এখন তিনি অনেকটাই স্ট্যাবল। চোখ খুলছেন, কথা বলার চেষ্টা করছেন। পা নাড়াচ্ছেন। তবে তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল।
এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে ওবায়দুল কাদেরকে বিএসএমএমইউর ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়া হয়।
সেখান থেকে জরুরি ভিত্তিতে তাকে সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে এনজিওগ্রাম শেষে ওবায়দুল কাদেরের হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ার কথা জানান চিকিৎসকরা।
‘জীবন শঙ্কায়’ থাকা ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে হাসপাতালে আসেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপর হাসপাতালে ছুটে আসেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতকর্মীরা।
তার সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর দোয়া চেয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার পরিবার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন