ড. ইউনূসের বিচার স্থগিত চেয়ে চিঠি: নোবিপ্রবি নীল দলের শিক্ষকের প্রতিবাদ

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ চেষ্টার প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(নোবিপ্রবি) নীল দলের ২৫৬ জন শিক্ষক।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) নীল দলের সভাপতি ড. এমডি মাসুদ রহমান ও সাধারন সম্পাদক(ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ড. মুহাম্মাদ ইউনুসের বিরুদ্ধে শ্রমআইনে চলমান মামলাটি স্থগিত চেয়ে কতিপয় নোবেলজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ বহিরাষ্ট্রীয় ১৬০ জন ব্যক্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি অযাচিত খোলা চিঠি দিয়েছেন। এ ঘটনায় গভীর শঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নীলদল।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ২২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং স্বাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। যেখানে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তার সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বাংলাদেশে আইনের শাসন বিদ্যমান এবং আইন সবার জন্য সমান হওয়ায় এখানে দেশীয় বা বহিরাষ্ট্রীয় কারো হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নাই।

অতএব ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে চলমান মামলার বিষয়ে অযাচিত এবং অপ্রয়োজনীয় বিবৃতি বা চিঠি প্রদান করা বাংলাদেশের বিচার। ব্যবস্থার উপর অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ বলে পরিলক্ষিত হয়। সেই সাথে উক্ত বিবৃতি আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা এবং বাংলাদেশের শ্রম আইনে প্রদত্ত শ্রমিকদের অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলীর সম্পূর্ণ পরিপন্থি। ড. ইউনুসের ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে শ্রমিকদের স্বার্থের বিরুদ্ধে এ ধরনের বিবৃতি অত্যন্ত অমানবিক।

বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, এছাড়াও উদ্বেগের সাথে লক্ষণীয় যে উক্ত বিবৃতিতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, রাজনীতি ও নির্বাচন সংক্রান্ত বিরূপ মন্তব্যও করা হয়েছে। যা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল। লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ এই ধরনের অযাচিত, অবমাননাকর ও বেআইনি হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টাকে নিন্দাভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

সবশেষে নীলদলের শিক্ষকরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সুনাম ও সমৃদ্ধি যখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে তখন একথা স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে উক্ত বিবৃতি দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক দূরভিসন্ধিমূলক। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নীলদল এই ১৬০ কর্তাব্যক্তির বিবৃতির প্রতিবাদ ও প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।