ঢাকায় আয়ের এক-তৃতীয়াংশ যায় বাড়ি ভাড়ায়
তিলোত্তমা নগরী রাজধানী ঢাকায় বসবাসরত ভাড়াটিয়াদের শতকরা ৮২ ভাগেরই আয়ের এক-তৃতীয়াংশ বাড়িভাড়ায় ব্যয় হয় যায়। আর ৪৪ শতাংশ মানুষই তাদের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে বাড়ি ভাড়া দেন। শুধু ঢাকায় বসবাসরতদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ মানুষের নিজের বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই। থাকেন ভাড়া বাড়িতে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ‘নগর পরিস্থিতি-২০১৭: ঢাকা মহানগরীর আবাসন’ শীর্ষক এক গবেষণায় এই চিত্র দেখা গেছে। রোববার(৩১ ডিসেম্বর) ঢাকার মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টার ইনে গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন প্রকল্পটির প্রধান সৈয়দা সেলিনা আজিজ।
প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি বলেন, ঢাকার চারটি এলাকায় পরিচালিত এ গবেষণায় দেখা যায়, শতকরা ৮২ ভাগ মানুষই তাদের আয়ের ৩০ শতাংশই ব্যয় করেন বাড়ি ভাড়ায়। আর ৪৪ শতাংশ মানুষ তাদের আয়ের ৪৫ভাগই বাড়ি ভাড়া ইউটিলিটি বিল ও পরিবহন খাতে ব্যয় করেন, যা তাদের সামর্থ্যের বাইরে।
বাড়ি ভাড়ায় অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে জীবনযাত্রার মান নিয়ে তাদের আপোস করতে হয় বলে মন্তব্য করেন সেলিনা।
গবেষণায় উঠে এসেছে, ঢাকায় বসবাসবাসী ৩২ শতাংশ নিজেদের বাড়িতে থাকেন, বাকি ৬৮ শতাংশ থাকেন ভাড়া বাড়িতে। ভাড়াটিয়াদের মধ্যে ৫৫ ভাগ এক হাজার বর্গফুটের চেয়ে ছোট বাসায় থাকেন। ৫ ভাগ মানুষ থাকেন দুই হাজার বর্গফুটের ঘরে।
পুরান ঢাকা, মিরপুর, রামপুরা ও বাড্ডা- এই চারটি এলাকার ৪০০টি বাড়িকে নমুনা হিসেবে নিয়ে জরিপের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করেন বিআইজিডির গবেষক দল। সেলিনা বলেন, ঢাকায় অ্যাপার্টমেন্ট ও জমির অত্যধিক দামের কারণে ৬৮ শতাংশ ভাড়াটিয়ার তা কেনার কোনো পরিকল্পনা নেই। যারা বাড়ি বা ফ্লাট কিনেছেন, তাদের ৬১ শতাংশ নিজেদের পরিবারিক বা ব্যক্তিগত আয় থেকে তা করা হয়েছে।
১১ভাগ মানুষ বাড়ি বা ফ্লাট কিনেছেন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। তবে ব্যাংক ঋণে উচ্চ সুদের হার, স্বল্পমেয়াদী ঋণ পরিশোধের সময়সীমা এবং ঋণ প্রাপ্তি ঝামেলাকর হওয়ায় তারা আগ্রহী নন বলে জরিপকারীদের জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, বর্তমানে ঋণ নিয়ে বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট কিনতে গেলে ৭০ শতাংশ টাকা ব্যাংক দেয়। বাকি ৩০ শতাংশ ক্রেতাকে এককালীন পরিশোধ করতে হয়। এজন্য অনেক ক্রেতা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। সেকারণেই ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনার এককালীন পরিশোধ ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা এবং সরকারি অব্যবহৃত প্লট বা জায়গায় ফ্লাট নির্মাণের সুপারিশ করেছেন গবেষকরা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. সুলতান হাফিজ রহমান আবাসন খাতকে কেন্দ্র করে বন্ড মার্কেটকে উন্নত করার পরামর্শ দেন।
অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা উন্নত করার পরামর্শও দিয়ে তিনি বলেন, শতকরা ৯৫ ভাগ লোকের কোনো ফায়ার সিস্টেম নেই। অথচ বাড়িতে আগুন লাগাটা এখন সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। যত চাপ বাড়বে তত ঝুঁকি বাড়বে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন