ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন আরও ৯ ছাত্র
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় সংঘাত, ভাঙচুর, উসকানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার হওয়া আরও ৯ শিক্ষার্থী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
সোমবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তারা মুক্তি পান। এর আগে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৯ শিক্ষার্থী।
এ নিয়ে আন্দোলনের সময় কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ২২ শিক্ষার্থীর মধ্যে সোমবার সকাল পর্যন্ত ১৮ জন মুক্তি পেলেন।
বাকি চার শিক্ষার্থীর জামিনের কাগজপত্র ঠিকঠাক হলে তারাও সোমবার দুপুরের মধ্যে মুক্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার জাহিদুল আলম।
শিক্ষার্থীরা যখন একে একে বেরিয়ে আসছিলেন, তখন জেলগেটে সৃষ্টি হয় আবেগঘন পরিবেশ। স্বজনের বুকের তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সোমবার সকালে মুক্তি পাওয়া ৯ ছাত্র হলেন- সাউথ ইস্টের ফার্মাসি বিভাগের ছাত্র জাহিদুল হক, টেক্সটাইল ইঞ্জিয়ারিং বিভাগর নূর মোহাম্মদ, ইস্ট ওয়েস্টের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের ছাত্র খালিদ রেজা, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র রেদোয়ান আহমেদ, জেনেটিক ইঞ্জিয়ারিং অ্যান্ড বায়ো-টেকনোলজির ছাত্র রাশেদুল ইসলাম, নর্থ সাউথের মাইক্রো বায়োলজির ছাত্র শাখাওয়াৎ হোসেন, বিবিএর ছাত্র আজিজুল করিম, আইইউবির বিবিএর ছাত্র শিহাব শাহরিয়ার ও ইস্ট ওয়েস্টের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের ছাত্র তরিকুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীরা একে একে বেরিয়ে আসছিলেন তখন জেলগেটে সৃষ্টি হয় আবেগঘন পরিবেশ। স্বজনের বুকের তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বজনদের প্রত্যাশা, বাকিরাও সোমবার মুক্তি পাবেন।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় মুক্তি পাওয়া ৯ শিক্ষার্থী হলেন— বাড্ডা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী রেজা রিফাত ওরফে আখলাক, ভাটারা থানা এলাকায় গ্রেফতার আইইউবির ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র ফরিদ আহমেদ ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান, বাড্ডা থানা এলাকায় গ্রেফতার ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ষষ্ঠ বর্ষের ছাত্র সীমান্ত সরকার ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ইক্তিদার হোসেন।
এ ছাড়া বাড্ডা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রি ও প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র ইফতেখার আহমেদ ও প্রেসিডেন্সিয়াল ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং একাদশ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মো. হাসানও মুক্তি পেয়েছেন।
জামিনে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন ভাটারা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএ শেষ বর্ষের ছাত্র সামাদ মর্তুজা বিন আজাদ।
শিক্ষাবিদ ড. অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল যৌক্তিক। ওটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না। তারা কোনো ভাঙচুর বা অপরাধ করেনি। বরং হেলমেট পরা কিছু ব্যক্তি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশের উচিত হামলাকারীদের গ্রেফতার করা। সেটি না করে নিরীহ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করেছে। সেই গ্রেফতার আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল। অথচ পরে দেখা গেল, শুধু গ্রেফতার নয়, তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কাউকে হয়রানি করা যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি, জামিন দেয়া হয়েছে ভালো। প্রত্যেক্ষ শিক্ষার্থীকে জামিন দিতে হবে।
কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ২২ শিক্ষার্থীর জামিননামা আদালত থেকে কারাগারে পৌঁছায়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন